রাজধানীর বেইলি রোডে বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে রিকশাচালক, আরোহী বাবা ও তার শিশু সন্তানকে আহত করার ঘটনা কোনো স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
শুক্রবারের ওই দুর্ঘটনা নিয়ে রোববার রাতে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি কোনো স্বাভাবিক দুর্ঘটনা নয়। কারণ যে গতিতে গাড়িটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়েছে, তা দেখে মনে হয়েছে চালক রাস্তায় রেসিং করছিল। এমনকি অ্যাক্সিডেন্টের পর চালক স্কুলছাত্রটি গাড়ি না থামিয়ে সরাসরি বাসায় চলে যায়।’
বিপ্লব কুমার বলেন, ‘ব্যাংক কর্মকর্তা ফখরুল হাসান তার পাঁচ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে রিকশায় সিদ্ধেশ্বরী থেকে বেইলি রোড হয়ে রমনা পার্কের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার রিকশাটিকে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয় এবং চালক গাড়ি না থামিয়ে পালিয়ে যায়। ধাক্কায় ফখরুল তার শিশু সন্তান নিয়ে রাস্তায় ছিটকে পড়েন। তারা দুজন গুরুতর আঘাত পান। শিশুটির পা ভেঙে গেছে এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম রয়েছে। ফখরুলের হাত ভেঙেছে। এছাড়াও তিনি মুখ মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। রিকশাচালকও গুরুতর আহত হয়েছেন।’
উপ-কমিশনার বলেন, ‘হাতিরঝিলের মীরবাগ এলাকা থেকে গত রাতে গাড়িটি আমরা জব্দ করি। ঘটনার পরদিন সকালে গাড়ির চালক তার মাকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে মেহেরপুরের গাংনিতে তাদের গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। পরে পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার আলফাডাঙ্গায় খালার বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’
বিপ্লব কুমার সরকার জানান, এ ঘটনায় রমনা থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে। গাড়ির চালকের জন্ম ২০০৬ সালে। গাড়িতে আর কেউ ছিল না। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ছেলেটির বাবা সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী।
গাড়িচালক ছেলেটি উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ বছর ড্রপ দিয়ে সে আলমডাঙ্গার একটি স্কুলে পুনরায় দশম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। তাকে নিয়ে আসার পর রমনা থানায় হস্তান্তর করা হবে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘গাড়িটি কামাল মিয়ার নামে রেজিস্ট্রেশন করা। তবে তাকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এ কারণে আমরা এখনও কামাল মিয়ার সঙ্গে ছেলেটির সম্পর্ক কী তা জানতে পারিনি।’