বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিনিয়োগ আকর্ষণে শীর্ষে তিন খাত, ব্র্যান্ডিংয়ে জোর

  •    
  • ২১ নভেম্বর, ২০২১ ২০:২০

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘শুভাকাঙ্ক্ষী ও উন্নয়ন সহযোগীদের উপদেশ-পরামর্শ আমরা গ্রহণ করি। কিন্তু দিন শেষে সিদ্ধান্তটা আমাদের। আমরা অন্য কোনো দেশের পেছনে ছুটছি না, অন্য কারো মতো হতেও চাই না। আমরা আমাদের মতোই। এটিই আমাদের ব্র্যান্ডিং। আমরা নিজেদের মতো করে দেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ তৈরি করেছি।’

দেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়া এমনকি এশিয়ার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ সম্ভাবনা এখন বাংলাদেশের। এখানে বিনিয়োগ উপযোগী খাতেরও অভাব নেই। এর মধ্যে প্রধান তিনটি খাত হলো কৃষি, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়ন। এসব খাতের উপযোগিতা বহির্বিশ্বে তুলে ধরে বিনিয়োগ আকর্ষণে যথাযথ ব্রান্ডিং জরুরি।

রোববার ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে ‘গ্রোথ ড্রাইভারস ফর বাংলাদেশ’ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উন্মোচন করা হয়। এতে কৃষি-ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়নের (গ্রিন ফাইন্যান্স) মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি করার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এতে বলা হয়, দেশের উন্নতির পেছনে বেসরকারি খাতের সংযুক্ততা বৃদ্ধি, রেমিট্যান্স, অর্থনৈতিক উদার নীতি, বাণিজ্য একীভূতকরণের মতো নানা বিষয় নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে।

রাজধানীর বনানীতে শেরাটন হোটেলে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও এফআইসিসিআই প্রেসিডেন্ট রুপালী চৌধুরি। সভাপতিত্ব করেন এফআইসিসিআই নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের কান্ট্রি ম্যানেজার স্বপ্না ভৌমিক।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী ও উন্নয়ন সহযোগী রয়েছে। তাদের উপদেশ ও পরামর্শ আমরা গ্রহণ করি, কিন্তু দিন শেষে সিদ্ধান্ত আমাদের। আমরা অন্য কোনো দেশের পেছনে ছুটছি না, অন্য কারো মতো হতেও চাই না। এটিই আমাদের নিজস্বতা, আমাদের ব্র্যান্ডিং। আমরা নিজেদের মতো করে চমৎকার বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করেছি। যে কেউ এ দেশে বিনিয়োগে আসতে পারেন।’

এম এ মান্নান বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন যেমন পূরণ হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের সক্ষমতাও প্রমাণ হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ মেগা প্রকল্পগুলো আগামীর বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিত্র। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ছে।’

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময়। বাণিজ্য সংগঠনগুলো অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমাদের নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এর মধ্যে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে। এগ্রিকালচার এখন বিজনেসে রূপান্তরিত হচ্ছে। গ্রিন ফাইন্যান্সিংয়ের দিকে যেতে হবে। সরকার অনেক ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি করছে, ব্যবসায়ীদের এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

‘বিএমডব্লিউ যখন দেশে বাজারজাত শুরু করে তারা পুরো বছরে ২০০ গাড়ি বিক্রির টার্গেট নেয়। কিন্তু তিন মাসের মধ্যেই তাদের লক্ষ্য পূরণ হয়ে যায়। এ থেকে বোঝা যায় এদেশে মধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি প্রসার লাভ করছে।’

সেশন আলোচনায় অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পোশাক খাত দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে জাপান, চীন ও ভারতে রপ্তানির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে হবে। মধ্যবিত্ত দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ডুয়িং বিজনেস পরিবেশ উন্নয়নে কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংক এই নির্দেশক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধ করলেও বাংলাদেশ নিজের উদ্যোগে পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সেবা দেয়া হচ্ছে।’

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির বলেন, বেসরকারি খাত শিল্প বহুমুখীকরণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। নীতিমালা অনুকূলে থাকায় এটা সম্ভব হয়েছে।

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘আমাদের আর জিডিপি ব্র্যান্ডিংয়ের সময় নেই। বরং অন্য কিছু ব্র্যান্ডিং করার সময় এসেছে। দেশে বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে, অনেক সাফল্যগাথাও আছে। আমি মনে করি বাংলাদেশ হচ্ছে পৃথিবীর কারখানা। এখানে উৎপাদিত জুতা, গার্মেন্ট, ওষুধসহ অনেক পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের চাহিদা মেটাচ্ছে।’

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি বলেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে সেরা। এদেশে ব্র্যান্ডিং করার মতো অনেক বিষয় রয়েছে। তবে বিভিন্ন ব্যবসায় নীতিমালায় স্থিতিশীলতা থাকতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, বিদেশিরা এসে বিনিয়োগ করল; কিন্তু কয়েকদিন পর নীতিমালার পরিবর্তন হওয়ায় তাদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাংক কেনু বলেন, বাংলাদেশে প্রধানত দুটি বিষয়ে আরও ব্র্যান্ডিং দরকার। একটি গার্মেন্ট খাত অপরটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এদিক দিয়ে পৃথিবীর গুটিকয়েক দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

আলোচনায় আরও অংশ নেন এইচএসবিসির বাংলাদেশের সিইও মাহবুব উর রহমান, নেদারল্যান্ডসের সহকারী মিশন প্রধান পাউলা রোজ স্কিনডিলার, এফআইসিসিআই’র সহ-সভাপতি ও সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এইচ এম ফাইরুজ, এফআইসিসিআই’র নির্বাহী সদস্য ও স্ট্যান্ডার্ড চ্যার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয় প্রমুখ।

এ বিভাগের আরো খবর