অবৈধ ও নিয়মনীতি না মেনে পরিচালিত ইটভাটার তালিকা করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হবিগঞ্জ পরিবেশ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম পবন চন্দ্র বর্মণ রোববার সকালে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরকে এ নির্দেশনা দেন।
নির্দেশনায় বলা হয়, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা ইটভাটার কার্যক্রম তদন্ত ও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করবেন। জেলায় কতটি ইটভাটা আছে, সেগুলোর মধ্যে কয়টির অনুমোদন আছে, পরিবেশ ছাড়পত্র আছে কি না, নিয়মনীতি অনুসরণ করছে কি না এবং কয়টি ভাটার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা আছে, তা তদন্ত করে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে আদালতের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রোববার আমরা নির্দেশনাটি পেয়েছি। এ বিষয়ে দ্রুত কাজ শুরু করব। তবে আমার অফিসে মাত্র একজন স্টাফ। এ কারণে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব কি না, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হবিগঞ্জে ৯৯টি ইটভাটা আছে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা ১০০-এর বেশি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ইটভাটাগুলো সরকারি কোনো নিয়ম না মেনে নিজস্ব নিয়মে চলছে। প্রতিটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে জনবসতি আছে এমন এলাকায়। চুল্লির উচ্চতা না মানায় ইট পোড়ানোর সময় আশপাশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল জানান, এই জেলায় গড়ে ওঠা সব ইটভাটার মাটিই আসছে ফসলি জমি থেকে। এতে একদিকে যেমন কমছে জমির উর্বরতা, তেমনি মাটি বহনে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করায় নষ্ট হচ্ছে রাস্তাও। ভাটায় জ্বালানি হিসেবে কয়লা পোড়ানো বাধ্যতামূলক হলেও কেউ কেউ প্রশাসনের আড়ালে বন থেকে কেটে আনা গাছ পোড়াচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘ইটভাটাগুলো পরিবেশের কতটা ক্ষতি করছে তা বলে বোঝানোর মতো না। কোনো ভাটাই নিয়মনীতি মেনে স্থাপন করা হয়নি। প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ভাটা পরিচালিত হচ্ছে।
‘দ্রুত এসব ভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা আগেও দেখেছি প্রশাসন অভিযান চালালেও কোনো ব্যবস্থা নেয়ার আগেই থমকে যায়।’