রংপুরে প্রাইম ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মহানগর কোতোয়ালি আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম রোববার সন্ধ্যায় আসামিকে কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দেন।
যাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তার নাম আবু রায়হান। তিনি প্রাইম ব্যাংকের বগুড়া শাখার অফিসার (ক্যাশ) হিসেবে কর্মরত।
রংপুর মহানগরীর ডিসির মোড় থেকে শনিবার গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রংপুরের পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওয়াহেদুজ্জামান।
তিনি জানান, ২০২০ সালে রংপুর শহরের ধর্মসভা মন্দিরের পাশে অবস্থিত প্রাইম ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে হ্যাকাররা ৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা চুরি করেছে বলে দাবি করে করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় ওই বছরের ৬ অক্টোবর প্রাইম ব্যাংকের রংপুর শাখার ব্যবস্থাপক পীযুষ কুমার রায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে রংপুর কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পায় রংপুর পিবিআই।
এসআই ওয়াহেদুজ্জামান জানান, এটিএম বুথের ভল্টে টাকা লোড করার জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মো. মোস্তাফিজ ও আবু রায়হান নামের দুজন কর্মকর্তাকে গোপন পাসওয়ার্ড দেয়। তারাই শুধু এই এটিএম বুথে টাকা লোড করতেন।
গত বছরের ১৭ জুন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটিএম বুথটি বিকল হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ঢাকা অফিসের প্রকৌশলীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। এতে সময় লেগে যায় প্রায় তিন মাস। ৪ নভেম্বর বুথটির ভল্ট খোলেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা। খুলে দেখা যায় ভল্টের তিনটি ক্যাসেট চুরি হয়েছে।
পিবিআইয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তদন্ত করতে গিয়ে দেখি, ভল্টটি বিকল হওয়ার আগে তিনবার টাকা লোড করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমবার লোড করেছেন ফরহাদ হোসেন ও আবু রায়হান। দ্বিতীয়বার লোড করেছেন আবু রায়হান ও ব্যাংকের ফ্যাসিলিটিস স্টাফ মিলন মিয়া। ওই বছরের ৩ জুন তৃতীয়বারের মতো বুথের ভল্টে ৩০ লাখ টাকা লোড করেন আবু রায়হান।’
ওয়াহেদুজ্জামান আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত আবু রায়হান ব্যাংকটির বগুড়া শাখায় বদলি হন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। তিনি গত বছরর ২০ আগস্ট পর্যন্ত রংপুর শাখায় কর্মরত ছিলেন। তিন বার ওই ভল্টে টাকা লোড করার কোনো এক সময় তিনি ওই টাকা চুরি করেছেন।’
রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা অনেকগুলো ভিডিও ফুটেজ পেয়েছি। সেগুলো যাচাই করেই নিশ্চিত হয়েছি। একই সঙ্গে ব্যাংক থেকে যাদের ভল্টের পাসওয়ার্ড দেয়া হয়েছিল, তারা আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতেও তারা সাক্ষ্য দেবেন।’