ত্রিপুরা পুর ভোটের প্রচারে গিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগে তৃণমূলের যুব সভাপতি সায়নী ঘোষকে গ্রেপ্তার করেছে ত্রিপুরা পুলিশ।
রোববার সকালে তৃণমূল নেতাদের হোটেলে হানা দেয় ত্রিপুরা পুলিশ। তাদের অভিযোগ, সায়নী ঘোষের গাড়ি ধাক্কা মেরেছে এক ব্যক্তিকে। তাছাড়া সভায় কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ রয়েছে সায়নীর বিরুদ্ধে। তাই তাকে থানায় যেতে হবে।
উল্টোদিকে তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভানেত্রী সায়নী ঘোষ ও তার সঙ্গীদের ত্রিপুরা পুলিশ হেনস্থা করার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
সায়নী গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইট করে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হলো সায়নী ঘোষকে। ধিক্কার ত্রিপুরা সরকার। থানায় হামলাকারীরা গ্রেপ্তার হলো না। গ্রেপ্তার হলো সায়নী।’
সায়নীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার নোটিশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা ত্রিপুরা বিজেপির দেউলিয়াপনা।’
রোববার সকালে এ ঘটনায় সায়নী ঘোষ ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন। সেখানে কুণাল ঘোষ পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘কোনো সেকশনে আপনি কোনো নোটিশ দেননি। আপনি কিভাবে যেতে বলতে পারেন? অভিযোগটা কী তা সায়নী জানেন না। পুলিশও বলতে পারছে না। তা সত্ত্বেও সৌজন্য দেখিয়ে তৃণমূল যুব সভানেত্রী আগরতলা ইস্ট থানায় যাবেন।’
এ বিষয়ে সায়নী ঘোষ বলেন, ‘এটা গতকাল রাত থেকে চলছে। রাত সাড়ে ১২টা থেকে পুলিশ আসছে। হয়রানি করা হচ্ছে আমাদের। যারা গ্রেপ্তার করতে আসছে তাদের কাছে যথোপযুক্ত কোনো নোটিশ নেই। তারা বলছেন- আমাদের সঙ্গে চলুন, কথা বলব। আমরা যখন ত্রিপুরাতে এসেছি, তখন চোখে চোখ রেখে লড়াই করব। আমরা যাচ্ছি। দেখি, ওরা কী কথা বলেন।’
তৃণমূলের অভিযোগ, পূর্ব আগরতলা থানায় হেলমেট পরে বিজেপি কর্মীরা জড়ো হয়। সেখানে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তৃণমূল কর্মীদের মারধর ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে বিজেপি নেতা নবেন্দু ভট্টাচার্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, থানার বাইরে সাধারণ মানুষ জড়ো হয়েছেন। তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে।’
সায়নী ঘোষকে কেন্দ্র করে থানায় পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় কুণাল ঘোষের। কুণালের অভিযোগ, ‘ত্রিপুরায় জঙ্গল রাজ চলছে।’
তৃণমূল নেত্রী সুস্মিতা দেব বলেন, শনিবার তেলিয়ামুড়ার সভায় সায়নী নিজের গাড়ি থেকেই সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন- ‘খেলা হবে’। এরপর বিজেপি সমর্থকরা তার গাড়ি তাড়া করে।
শনিবার রাতেও আগরতলায় ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটের প্রচারে গিয়ে বিজেপির বিরোধিতার মুখে পড়েন তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম, বাবুল সুপ্রিয় ও কুণাল ঘোষ। তাদের সভায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। তৃণমূলের সভামঞ্চ ভেঙে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধে।