বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘চোরাকারবারির বাড়ি’ সাইনবোর্ডে তীব্র ক্ষোভ ব্যারিস্টার সুমনের

  •    
  • ২১ নভেম্বর, ২০২১ ১৪:৪৪

সুমন বলেন, ‘আপনাদের বলতে চাই, অস্ত্র দিয়ে নয়, বিবেক দিয়ে সমাজটাকে ঠিক করেন। আপনারা আমাদের সম্প্রীতিটাকে নষ্ট করছেন, এলাকাটাকে কলঙ্কিত করে দিচ্ছেন।’

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের হবিগঞ্জ অংশে অন্তত দেড় শ বাড়িতে বিজিবির বসানো ‘চোরাকারবারির বাড়ি’, ‘মাদককারবারির বাড়ি’ সাইনবোর্ড নিয়ে দেশজুড়ে চলছে সমালোচনা। আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে বিজিবি বলছে, সামাজিকভাবে চাপের মুখে থাকলে অপরাধমূলক কাজ ছেড়ে দিতে পারে, এই চিন্তা থেকেই সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। আগামীতেও এ ধরনের কাজ চলবে।

বিষয়টি নিয়ে এবার নিজের তীব্র ক্ষোভের কথা ফেসবুক লাইভে জানিয়েছেন আলোচিত আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আপলোড করা ভিডিওতে রোববার দুপুরে সুমন বিজিবির এই কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন। এ সময় বিজিবির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

ভিডিও বার্তায় সুমন বলেন, ‘আমার উপরে যে সাইনবোর্ডটি দেখছেন এটি কোনো সাধারণ মানুষ লাগায়নি, এটি লাগিয়েছে বিজিবি। আমার সামনের বাড়িকে তারা ‘চোরাকারবারির বাড়ি’ হিসেবে চিহ্নিত করে দিয়েছেন। যেহেতু এটি আমার এলাকা চুনারুঘাট, সেহেতু এই বাড়িটি যদি চোরাকারবারির হয়, আমার এলাকা হিসেবে আমিও চোরাকারবারি। এই এলাকার যারা নেতা আছেন তারাও চোরাকারবারি।'

কতটা অমানবিক হলে এমন সাইনবোর্ড লাগানো যেতে পারে- এই প্রশ্ন তুলে সুমন বলেন, ‘এই বাড়ির মানুষগুলো এখন না স্কুলে যেতে পারেন। না কলেজে যেতে পারেন। তাদের বলা হয় তোরা তো চোরাকারবারির বাড়ির লোক।’

তিনি বলেন, ‘সমাজপতিরা যখন একটি বাড়িকে সমাজচ্যুত করেন তখন আমরা হাইকোর্টে গিয়ে মামলা করি। সমাজপতিরা করলে আমরা ঘৃণা করি। বিজিবির লোকজন কীভাবে একটি পরিবারকে এভাবে সমাজচ্যুত করে দেয়। এই সাইনবোর্ডের মাধ্যমে পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মকেও চোরাকারবারি বানিয়ে দিলেন। দেখেন কীভাবে এই ডিসিপ্লিনারি ফোর্স আমাদের দেশটাকে চালাচ্ছে।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে মাধবপুর সীমান্ত পর্যন্ত অন্তত দেড় শ বাড়ির আশপাশে এমন সাইনবোর্ড বসিয়েছে বিজিবি। ছবি: নিউজবাংলা

‘একটা জিনিস আপনাদের বলতে চাই। চোরাকারবারির বাড়ির সামনে এমন সাইনবোর্ড লাগাতে পারলেন। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীর বাড়ির সামনে তো লাগাতে পারেন নাই। তারা যুদ্ধাপরাধী, দুর্নীতিবাজতের বাড়িতে তো লিখতে পারেনি তারা দুর্নীতিবাজ। যারা ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে, তাদের বাড়িতে তো লেখেননি তারা ব্যাংকের টাকা লুটপাটকারী। বিজিবির মধ্যে যাদের দুই নাম্বারি করে চাকরি গেছে, তাদের বাড়িতে কেন লেখেননি দুই নাম্বারি করে তাদের চাকরি গেছে। আপনাদের এই সাহস নেই।’

বিজিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘বিজিবির কাজ ছিল বর্ডারে। আপনারা বর্ডারে কিছু পাস দেন বলেই তো এসব পাচার হচ্ছে। অভিযোগ আছে, এই বর্ডার দিয়েই ইন্ডিয়া থেকে আসা প্রতি গরুতে আপনারা দুই হাজার টাকা করে পান। এই টাকা কোথায় কোথায় যায় সেটিও আমার জানা আছে। এসব কথা তো বলতে চাই না। এমনিতেই শত্রুর অভাব নাই, তখন আপনারাও শত্রু হবেন।’

সুমন বলেন, ‘আপনাদের বলতে চাই, অস্ত্র দিয়ে নয়, বিবেক দিয়ে সমাজটাকে ঠিক করেন। আপনারা আমাদের সম্প্রীতিটাকে নষ্ট করছেন, এলাকাটাকে কলঙ্কিত করে দিচ্ছেন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আপনে অনেক জ্ঞানী মানুষ। আপনার আন্ডারের এসব ফোর্সকে বুঝান। তারা যা করে তা ঠিক নয়। সাইনবোর্ড মেরে এসব নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। এসব নিয়ন্ত্রণ করতে হলে এই মানুষগুলোকে বিকল্প কর্মসংস্থান দেন।’

দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে অনুরোধ জানান তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর