বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিমানে যাত্রী ভোগান্তি নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর ক্ষোভ

  •    
  • ২০ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:২৯

প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘যাত্রীসেবার মান ও উন্নয়নের সঙ্গে বিমানের ভাবমূর্তি জড়িত। একইভাবে জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত। যারা ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে পাইলটদের অসন্তোষ ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে যাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। আর এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান।

শনিবার সন্ধ্যায় কুর্মিটোলায় বিমান সদর দপ্তর বলাকায় প্রতিষ্ঠানটির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিমান প্রতিমন্ত্রী ও চেয়ারম্যান এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সম্প্রতি পাইলট অসন্তোষের কারণে বিমানের ফ্লাইট সূচিতে সৃষ্ট সংকট নিয়েও তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘যাত্রীসেবার মান ও উন্নয়নের সঙ্গে বিমানের ভাবমূর্তি জড়িত। একইভাবে জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের ভাবমূর্তিও জড়িত। যারা ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেবার মান নিশ্চিত করে অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমাদের টিকে থাকতে হবে। কোনোভাবেই সেবার মান নিম্নগামী হলে চলবে না।

‘বিমানের প্রাণশক্তি হলেন পাইলট ও কেবিন ক্রুরা। আপনারা বিভিন্ন সময়ে জাতীয় চরম দুর্যোগে মানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছেন। আপনাদেরও মনে রাখতে হবে প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এদেশের সংবিধান। এখানে প্রত্যেক নাগরিক ও যাত্রীর অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।’

বিমান চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা করা উচিত। এই ৫০ বছরে বিমান যে অবস্থানে আসার কথা ছিলো আমরা সে পর্যায়ে আসতে পেরেছি কিনা সেই আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে।

‘আমরা যারা বিমানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য রয়েছি কিংবা যারা এমডির নেতৃত্বে কাজ করছেন আমাদের সবারই একটু ভাবা উচিত যে আমরা কি চেয়েছিলাম, কোথায় এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো যাত্রীসেবার মান একটি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, যাতে মানুষ ভালো বলে। কিন্তু পারসেপসন অনেকটা আগের মতোই রয়ে গেছে।

‘আমরা সেই জায়গায় আসতে পারছি না। প্রফিট মোটিভ অরগানাইজেশন শুধু নয়, বিমানের একটি সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি আছে। যাত্রীরা ঠিকমতো সেবা পাচ্ছেন কিনা সব সময় সেটা দেখার প্রয়োজন রয়েছে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে বিমান প্রতিমন্ত্রী ও চেয়ারম্যানসহ অন্যরা। ছবি: নিউজবাংলা

গত বছর দেশে করোনা মহামারি শুরু হলে ব্যয় সংকোচন করতে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে পাইলটদেরও বেতন কেটে আসছিল বিমান কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগস্ট থেকে কর্মকর্তাদের বেতন আর কাটা হবে না। কিন্তু পাইলটদের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি।

মূলত এ কারণে বিমানের পাইলটদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। গত জুলাই মাসে সাত দিন চুক্তির অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা থেকে বিরত থাকেন তারা। এতে সংকট তৈরি হয় বিমানের ফ্লাইটগুলোতে। পরে অবশ্য পরিচালনা পর্ষদের আশ্বাসে ফ্লাইটে ফেরেন তারা।

কিন্তু বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় পাইলট সংকটে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি ফ্লাইটের সিডিউলে সংকট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

বিষয়টির দিকে ইঙ্গিত করে বিমান চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছুদিন আগে, প্রধানমন্ত্রী যখন রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে ছিলেন তখন অনবরত কয়েকদিন সিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। এটা মানুষের ভোগান্তির কারণ হয়েছে। এর জন্য দায়ীদের বের করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

‘বিমানের পাইলট ও কেবিন ক্রুদের অর্জনের পাশাপাশি দু-একজনের ব্যর্থতা পুরো বিমানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এর জন্য দায়ীদের বের করতে এমডিকে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিমানের কাজ চলবে এমডির নেতৃত্বে।’

বেতন কাটা নিয়ে বিমান নতুন যে আদেশ জারি করেছে তাতে বলা হয়েছে, বিমানে কর্মরত কর্মকর্তা এবং যেসব ককপিট ক্রুর চাকরির বয়স শূন্য থেকে পাঁচ বছর, জুলাই মাসে তাদের কোনো বেতন কাটা হবে না। তবে যেসব ককপিট ক্রুর চাকরির বয়স ৫ থেকে ১০ বছর, জুলাই মাসে তাদের বেতন থেকে ৫ শতাংশ এবং যারা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন তাদের বেতন ২৫ শতাংশ কাটা হবে। এ সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পাইলটরা।

বিমান ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, পাইলটদের মধ্যে যাদের চাকরির বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে, স্বাভাবিক সময়ে তাদের বেতন ২ লাখ ৬ হাজার ৮৪ টাকা। যাদের চাকরির বয়স ৫ থেকে ১০ বছর, তারা ওভারসিজ ভাতা হিসেবে অতিরিক্ত পান ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এতে তাদের বেতন হয় ৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা।

যাদের চাকরির বয়স ১০ থেকে ২০ বছর, তাদের বেতন ওভারসিজ ভাতাসহ ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর যাদের চাকরির বয়স এর চেয়ে বেশি, তারা পান ১২ লাখ এক হাজার টাকা। এছাড়া চুক্তির অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করলে তারা আলাদা করে প্রোডাক্টিভিটি অ্যালাওয়েন্স পান।

আগে পাইলটদের নির্দিষ্ট হারে যে ওভারসিজ ভাতা দেয়া হতো, তা করোনায় আয় কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তন করে বর্তমানে ফ্লাইং ঘণ্টা হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমান বোর্ড।

বর্তমানে বিমানে সব মিলিয়ে ১৫৭ জন পাইলট কর্মরত। বাপা’র সঙ্গে বিমানের চুক্তি অনুযায়ী একজন পাইলটের দৈনিক সর্বোচ্চ ১৩ ঘণ্টা কাজ করার কথা। সপ্তাহে একজন পাইলট কাজ করবেন সর্বোচ্চ ৭৫ ঘণ্টা। এর বাইরেও তিনি সপ্তাহে দুদিন ছুটি পাবেন।

এ বিভাগের আরো খবর