দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কারও মৃত্যু হয়নি। দীর্ঘ ১৯ মাসেরও বেশি সময় পর করোনায় মৃত্যুশূন্য একটি দিন কাটল বাংলাদেশে।
শনিবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১৭৮ জনের দেহে।
দেশে এ নিয়ে করোনা শনাক্ত হলো ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৯ জনের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭ হাজার ৯৪৬ জনের।
গত একদিনে ৮৩৬টি ল্যাবে ১৫ হাজার ১০৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১ দশমিক ১৮ শতাংশ।
দেশে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এরপর গত বছরের ৩ এপ্রিল একদিনে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। এর ১৯ মাসের বেশি সময় পর ফের করোনায় মৃত্যুশূন্য দিনে ফিরল বাংলাদেশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহ নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সে দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে ধরা হয়। দেশে দুই মাসের অধিক সময় ধরে করোনা সংক্রমণ ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে। সরকারের লক্ষ্য এই হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি সরকারের টিকাদান কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইতোমধ্যে সরকার ২১ কোটি টিকা কেনা হয়েছে। দেশে ১২ কোটি টিকা আসছে। এরইমধ্যে ৯ কোটি টিকা প্রয়োগ হয়েছে। আগামী বছর মার্চের ১২ কোটি মানুষের দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
অবশ্য জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর আবারও বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি হতে দেখা গেছে। তাই সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতা ধরে রাখতে যত দ্রুত সম্ভব ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। সংক্রমণ শূন্যের কোটায় না আসা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে তৃতীয় ঢেউ আসার শঙ্কা রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানার আশঙ্কা কিছুটা কম।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর আবারও বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি হতে দেখা গেছে। তাই সংক্রমণের নিম্নমুখী প্রবণতা ধরে রাখতে যত দ্রুত সম্ভব ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ মহলের।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা মোশতাক হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।