বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিনা নোটিশে আত্মসমর্পণ করব: মেয়র জাহাঙ্গীর

  •    
  • ২০ নভেম্বর, ২০২১ ১৬:০০

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে দাবি করে মেয়র বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিলাম কথা বলার জন্য। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েও পাইনি। যদি দেখা করে কথাগুলো বলতে পারতাম, তাহলে উনি সঠিক জিনিসটা জানতেন। ওনার কাছে সত্য তথ্য গেলে অবশ্যই ন্যায়বিচার পেতাম।’

গ্রেপ্তার করতে হবে না, প্রয়োজন হলে বিনা নোটিশে আত্মসমর্পণ করার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং মহানগর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।

গাজীপুর মহানগরীর হারিকেন এলাকায় নিজ বাসভবনে শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি।

কাঁদতে কাঁদতে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমার ভুল হতে পারে, কিন্তু আমি কোনো পাপ বা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত না। মানুষের ভুল হয়।’

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছে দাবি করে মেয়র বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছিলাম কথা বলার জন্য। তবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েও পাইনি।

‘যদি দেখা করে কথাগুলো বলতে পারতাম, তাহলে উনি সঠিক জিনিসটা জানতেন। ওনার কাছে সত্য তথ্য গেলে অবশ্যই ন্যায়বিচার পেতাম।’

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ক্ষমতাসীন দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে শুক্রবার বিকেলে জাহাঙ্গীরের দলীয় সদস্যপদ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

প্রায় দুই মাস ধরে জাহাঙ্গীরের শাস্তির দাবিতে ক্ষমতাসীন দলের একাংশের বিক্ষোভের মধ্যে শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার কথাও জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এই প্রসঙ্গে নিজেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘কিছু লোক ২০১৩ সালের পর থেকে আমাকে হত্যা এবং প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য পিছে লেগে আছে। আমি বলতে চাই, যারা ঘরের ভেতরে এসে অডিও করতে পারে, যারা মানুষকে হত্যা করতে পারে, যারা রাস্তার মধ্যে গাড়িতে আগুন দিয়েছে, তাদের বিচার হয় নাই।

‘আমি আপনাদের দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই, তাদের বিচার না করে আমাকে কীভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়, সেই কাজটি হয়েছে। উনি (প্রধানমন্ত্রী) যদি আমাকে বিনা কারণে, বিনা দোষে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে বলেন, তাতে আমি রাজি আছি। আমার কোনো দ্বিমত নাই।’

গত ২২ সেপ্টেম্বর ঘরোয়া আলোচনার রেকর্ড ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে তাকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করতে শোনা যায়। এরপর আওয়ামী লীগের একটি অংশ জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভে নামে।

ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে গত ৩ অক্টোবর জাহাঙ্গীরের ব্যাখ্যা চায় আওয়ামী লীগ। এতে তাকে ১৫ দিন সময় দেয়া হয়। ১৮ অক্টোবর সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই মেয়র তার ব্যাখ্যা দেন বলে নিউজবাংলাকে জানান।

ব্যাখ্যায় কী লিখেছেন- এমন প্রশ্নে তার বক্তব্য ছিল, ‘আমি বলেছি এটা মিথ্যা, বানোয়াট। আমাকে ফাঁসানোর জন্য, ছোট করার জন্য এটা করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেই অপেক্ষা করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার যিনি প্রধান, আমার গার্জিয়ান (অভিভাবক), উনি যেটা ভালো মনে করেন সেটাই হবে।’

২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, ১৯ নভেম্বর তাদের দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে জাহাঙ্গীরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এই বৈঠকের আগে কয়েক দিনে মেয়রের পক্ষে-বিপক্ষে পোস্টারে সয়লাব হয়ে যায় গাজীপুর। মেয়রবিরোধীরা দাবি করতে থাকেন, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আসছে। তবে তার অনুসারীরা দাবি করতে থাকেন, তার কিছুই হবে না।

শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসার পরপরই গাজীপুরের সালনা, টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন মেয়রবিরোধীরা।

টঙ্গীতে মেয়রবিরোধীরা সন্ধ্যার পর আতশবাজি পুড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তারা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ করেন।

রাত ৮টার দিকে থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট দলে মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে। এ সময় তারা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এক প্রতিক্রিয়ায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নিজের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে জাহাঙ্গীর যে অপরাধ করেছে, সেই অপরাধের শাস্তি সে পেয়েছে। এতে আমরা আওয়ামী পরিবারের লোক, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোক, শুধু গাজীপুরের নয়, সারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সপক্ষের লোক খুশি। এ সিদ্ধান্তের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের মানুষ এ সিদ্ধান্তে আনন্দে উল্লসিত। কারণ তাদের অন্তরে জ্বালা তৈরি হয়েছিল এ বক্তব্যের পর। সে জন্য এর বহিঃপ্রকাশ গাজীপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীরা দলের সিদ্ধান্তে খুশি।’

এ বিভাগের আরো খবর