রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা ‘সিরিয়াস’ বলে জানালেন বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া।
এভারকেয়ারে শনিবার দুপুরে খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়ে ফেরার সময় সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন দলের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর।
রেজা কিবরিয়া বলেন, ‘সিসিইউতে থাকার কারণে আমরা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। ওনার অবস্থা এখনও সিরিয়াস, কিন্তু গত ৪৮ ঘণ্টায় একটু উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও পুরোপুরি সেইফ না।
‘আমরা বেগম জিয়ার চিকিৎসক ডা. জাহিদের সঙ্গে আলাপ করেছি। বিস্তারিত আলাপ করার পর উনি আমাদের জানিয়েছেন কী কী কারণে বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেয়া দরকার। কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা আছে যেগুলো সিংগাপুরেও নাই। এসব চিকিৎসা আমারিকায় সব থেকে বেশি ভালো হয়। ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে আমরা যেটা বুঝেছি সেটা হলো বেগম জিয়াকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়া দরকার।’
গণ অধিকার পরিষদের প্রধান বলেন, ‘উনার যে রোগগুলো এখন দেখা দিয়েছে সেগুলোর জন্য আমেরিকায় চিকিৎসা নেয়া সব থেকে বেশি জরুরি। আমি আশা করি, প্রধানমন্ত্রী ও ক্যাবিনেট বেগম জিয়ার চিকিৎসার এই বিষয়টা দেখবেন। মানবিক কারণে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেবে, এটা দেশের জন্য ভালো হবে।’
ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, ‘আমরা বেগম জিয়ার চিকিৎসক টিমের সাথে প্রায় ঘণ্টা খানেক সময় কথা বলেছি। সে সময় চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, বেগম জিয়া কারাগারে থাকার সময় তার চিকিৎসার অনিয়ম হয়েছে। সেখানে ডাক্তার ও মেডিক্যাল বোর্ড প্রতিদিন যে ফলো-আপ করার কথা ছিল সেই ফলো আপটা করেননি। এই কারণে তার যে শারীরিক জটিলতা সেটা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। তার মুক্তির পরে পোস্ট কোভিট জটিলতায় এখন খুবি খারাপ অবস্থায় আছে।
‘পূর্বের জটিলতা আর বর্তমান অবস্থা মিলিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসা দেয়া খুবই প্রয়োজন। এটা বেগম জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডই বলেছে। রাজনীতির বাইরে গিয়েও আমরা একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের স্ত্রী হওয়ার জন্যও এই মানবিকতাটা দেখাতে পারি। সরকার ও সরকারি দলের প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেব আহ্বান থাকবে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে যেন একটা মানুষকে আমরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত না করি।’
বেগম জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আপনারা কোনো কর্মসূচি দিচ্ছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে রেজা ও নূর জানান, বিএনপি তাদের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে। তাদের প্রতি গণ অধিকার পরিষদের সহানুভূতি আছে। আলাদাভাবে কর্মসূচির কোনো পরিকল্পনা থাকলে জানানো হবে।
এভার কেয়ার হাসপাতালে বেগম জিয়াকে দেখতে রেজা ও নূরের সঙ্গে ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের নানা স্তরের নেতা-কর্মী।