চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাঁচলাইশে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
থানার মির্জারপুল এলাকায় গত বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি শনিবার জানাজানি হয়।
কোপে আহত যুবকের নাম আরিফ হোসেন। তিনি পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকার আমির হামজার ছেলে।
আরিফকে এলোপাতাড়ি কোপানো ব্যক্তির নাম ওয়াহেদুল আলম।
আরিফের ভাই কামাল হোসেনের অভিযোগ, চাঁদার টাকা না পেয়ে তার সহোদরকে কুপিয়েছেন ওয়াহেদুল।
কামাল জানান, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে আরিফকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। ঘটনার ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার ভাইয়ের জ্ঞান এখনও ফিরেনি।
কী আছে ভিডিওতে
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি কালো শার্ট পরা যুবককে রামদা নিয়ে ধাওয়া করেন। পরে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে যুবক পড়ে গেলে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন পাঞ্জাবি পরা ব্যক্তি।
একপর্যায়ে গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন যুবক। ওই সময় কোপানোর পাশাপাশি হামলাকারী খুঁটির পাশের ইটের স্তূপ থেকে কয়েকটি ইট নিয়ে আহত যুবকের ওপর সজোরে নিক্ষেপ করেন।
মিনিট দুয়েক পর হামলাকারী পালিয়ে গেলে আশপাশের লোকজন যুবকের দিকে এগিয়ে যান।
চাঁদা দাবির অভিযোগ
কোপে আহত আরিফের ভাই কামাল নিউজবাংলাকে জানান, ওয়াহেদুল আলম বুধবার বিকেলে তার দলবলসহ মির্জারপুল এলাকায় যান। তারা ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে তা আদায়ে আসেন।
ওয়াহেদুল আরিফের কাছেও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন, কিন্তু আরিফ তা দিতে অস্বীকৃতি জানান। পাশাপাশি ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের কোনো ধরনের চাঁদা না দেয়ার অনুরোধ করেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শুরুতে আরিফকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করেন ওয়াহেদুল। পরে তাকে রামদা নিয়ে ধাওয়া করে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
পরে স্থানীয়রা আরিফকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) স্থানান্তর করা হয়। শনিবার সকাল পর্যন্ত আরিফের জ্ঞান ফিরেনি।
মামলার ৩ আসামি গ্রেপ্তার
ওই ঘটনায় বুধবার রাতেই পাঁচলাইশ থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন কামাল হোসেন।
মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি ৫ থেকে ৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এজাহারভুক্ত ৪ আসামি হলেন ওয়াহেদুল আলম, মো. টিপু, নয়ন দাশ ও আকাশ দত্ত।
মামলার পর ওই রাতেই পাঁচলাইশ এলাকা থেকে প্রধান আসামি ওয়াহেদুল আলমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পাশাপাশি মো. টিপু ও নয়ন দাশ নামের দুই আসামিকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছাদেকুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, গ্রেপ্তার ৩ জনকে চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানির জন্য রোববার দিন ঠিক করেছে।
মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।