বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাংবাদিকদের ‘পিঠের চামড়া তুলে নেবেন’ এমপি অপুর সমর্থকরা

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ২২:০৪

‘প্রিয় নেতা ইকবাল হোসেন অপুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ও কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো তথ্যবহুল না, বস্তুনিষ্ঠ না এবং সঠিক না। সাংবাদিক হোক, কবি হোক বা সাহিত্যিক হোক, যারা অসত্য কথা বলে, যারা অন্যায়কে সমর্থন করে, যারা মানুষের ভাবমূর্তি হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়, আজকের এ উত্তাল জনতা তাদের বিপক্ষে থেকে ইকবাল হোসেন অপুর পক্ষে থাকবেন।’

সংবাদ প্রকাশের জেরে শরীয়তপুরে সাংবাদিকদের চামড়া তুলে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি অংশ।

শহর আওয়ামী লীগ নেতা জাকির হোসেন কোতোয়াল এবং তার ভাই মনির হোসেনক গুলি ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় গণমাধ্যমে যাদের নাম এসেছে সেটি সঠিক নয় দাবি করে শুক্রবার এই হুমকি দেয়া হয়।

সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে এই জমায়েতটি করে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও পৌর কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারীর সমর্থকরা।

বেলা ১১টার দিকে শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে তারা। মিছিলে সাংবাদিকদের হুমকিসহ নানান উসকানিমূলক স্লোগান দেয়া হয়।

একটি ভিডিওতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নেতারা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলছেন ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, হুঁশিয়ার-সাবধান, উল্টাপাল্টা লিখিস না, পিঠের চামড়া রাখব না’।

মিছিল শেষে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশ করেন নেতাকর্মীরা।

সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, ‘ধিক্কার জানাচ্ছি সাংবাদিকতার নামে যারা হলুদ সাংবাদিকতা করেন তাদের। আজকে শরীয়তপুরের জনতা উত্তাল হয়েছে যারা হলুদ সাংবাদিকতা করেন তাদের বিরুদ্ধে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রিয় নেতা ইকবাল হোসেন অপুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ও কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো তথ্যবহুল না, বস্তুনিষ্ঠ না এবং সঠিক না। সাংবাদিক হোক, কবি হোক বা সাহিত্যিক হোক, যারা অসত্য কথা বলে, যারা অন্যায়কে সমর্থন করে, যারা মানুষের ভাবমূর্তি হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়, আজকের এ উত্তাল জনতা তাদের বিপক্ষে থেকে ইকবাল হোসেন অপুর পক্ষে থাকবেন।’

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফাসহ অনেকে।

শরীয়তপুরে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার রাতে শরীয়তপুর শহরের ডাকবাংলো এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ২১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সদস্য জাকির হোসেন কোতোয়াল ও তার ভাই মনির হোসেন কোতোয়ালকে কুপিয়ে আহত করে প্রতিপক্ষ। গুলি করার অভিযোগও করেছে তাদের পরিবার। হামলায় গুরুতর আহত জাকির ও তার ভাই মনিরকে রাতেই শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাদের ঢাকা মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় পালং মডেল থানায় মঙ্গলবার রাতেই মামলা হয়। মামলার আট আসামি হলেন বাচ্চু ব্যাপারী, তার ভাই চুন্নু ব্যাপারী, আবু বকর ব্যাপারী, দ্বীন মোহাম্মদ প্রকাশ, রাসেল তালুকদার, শরীফ বাবু, আব্বাস ব্যাপারী ও জুয়েল কাজী।

মামলার পর রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আব্বাস ও জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

হামলার পর আহত অবস্থায় শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারী ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে একটি ভিডিও বার্তা দেন আওয়ামী লীগ নেতা জাকির। জাকিরকে ঢাকায় নেয়ার পথে স্বজনদের করা ৩ মিনিট ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের ভোট হয় ১১ নভেম্বর। সেই নির্বাচনে জাকির কোতোয়ালের পরিবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে। এর জের ধরে শরীয়তপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাচ্চু ব্যাপারী ও তার সমর্থকরা ১৪ নভেম্বর জাকিরের ভাই মেহেদী হোসেনকে কুপিয়ে আহত করেন।

সেই ঘটনায় জাকির মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলা করার জন্য পালং মডেল থানায় যান। খবর পেয়ে বাচ্চু ব্যাপারীর লোকজন শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। থানা থেকে বের হয়ে মামলার কপি ফটোকপি করতে জাকির ও তার ভাই মনির শহরের ডাকবাংলা এলাকায় আসেন। সেখানে বাচ্চু ও তার সমর্থকরা দুই ভাইয়ের ওপর হামলা করে কুপিয়ে ও গুলি করে আহত করেন।

এ ঘটনায় নিউজ বাংলায় “মামলা করে আতঙ্কে ‘গুলিবিদ্ধ’ সেই আ. লীগ নেতার পরিবার” শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এ বিভাগের আরো খবর