বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জাহাঙ্গীরকে বহিষ্কারের খবরে গাজীপুরে আতশবাজি-মিষ্টিমুখ

  •    
  • ১৯ নভেম্বর, ২০২১ ২০:২৯

গাজীপুরের মানুষ এ সিদ্ধান্তে আনন্দে উল্লসিত। কারণ তাদের অন্তরের জ্বালা ছিল এ বক্তব্যের পরে। সে জন্য এর বহিঃপ্রকাশ গাজীপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীরা দলের সিদ্ধান্তে খুশি: আজমত উল্লাহ খান

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসার পর মহানগরে তার বিরোধীদের উল্লাস শুরু হয়েছে।

শুক্রবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এ সিদ্ধান্ত আসার পরপর গাজীপুরের সালনা, টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় আনন্দ মিছিল বের করেন মেয়রবিরোধীরা।

টঙ্গীতে মেয়রবিরোধীরা সন্ধ্যার পর আতশবাজি পুড়িয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে তারা একে অন্যকে মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ করেন।

রাত ৮টার দিকে থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট দলে মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দিকে। এ সময় তারা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান।

গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান এক প্রতিক্রিয়ায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নিজের মনগড়া বক্তব্য দিয়ে জাহাঙ্গীর যে অপরাধ করেছে, সে অপরাধের শাস্তি সে পেয়েছে। এতে আমরা আওয়ামী পরিবারের লোক, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোক, শুধু গাজীপুরের নয়, সারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সপক্ষের লোক খুশি। এ সিদ্ধান্তের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যদের শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’

তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের মানুষ এ সিদ্ধান্তে আনন্দে উল্লসিত। কারণ তাদের অন্তরের জ্বালা ছিল এ বক্তব্যের পরে। সে জন্য এর বহিঃপ্রকাশ গাজীপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে শুরু হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীরা দলের সিদ্ধান্তে খুশি।’

মেয়র জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের পর উল্লসিত নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান

জাহাঙ্গীর আলম ২০১৩ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে আলোচিত হয়ে ওঠেন। ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা এই নেতা সে সময় স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তিনি তখন মনোনয়ন চাইলেও ক্ষমতাসীন দলে বেছে নেয় আজমত উল্লাহকে।

জাহাঙ্গীর তখন উধাও হয়ে যান। একপর্যায়ে ভোটের আগে আগে তার দেখা মেলে এবং কাঁদতে কাঁদতে তিনি ভোট থেকে সরে গিয়ে আজমতকে সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দেন। তবে তার সমর্থকরা নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন কি না, এ নিয়ে বিতর্ক ৮ বছর পরেও শেষ হয়নি।

২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মার্কা দেয় জাহাঙ্গীরকে। সে সময় আজমত অনুসারীরা শুরুতে নিজেদের গুটিয়ে রাখেন। তবে জাহাঙ্গীর এই বিষয়টিকে সেভাবে পাত্তা দেননি আর তিনি বড় ভোটে জিতে মেয়র হন।

এরপর আওয়ামী লীগ মহানগরে যে কমিটি দেয়, তাতে আজমতকে সভাপতি করে জাহাঙ্গীরকে তার ডেপুটি করে। যদিও দলে জাহাঙ্গীরের প্রভাবই ছিল বড়।

মেয়র জাহাঙ্গীরকে আওয়ামী লীগের সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসার পর মিষ্টিমুখ করেন বিরোধীরা

মেয়রকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলে স্থানীয় পর্যায়ে বিভেদ তৈরি হবে কি না, এমন প্রশ্নে আজমত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগে অতীতেও কোনো বিভাজন ছিল না, এখনও নাই। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। এ দলের একটি গঠনতন্ত্র রয়েছে। সে গঠনতন্ত্রমাফিক দল পরিচালিত হয়।’

মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য গাজীপুর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা জাহিদ আহসান রাসেল, আজমত উল্লাহ খানকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠার পর তারা গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছিলেন।

মেয়র অস্বীকার করে এলেও তার এসব বক্তব্যের ভিডিও ও অডিও রেকর্ড ছিল। আর সেটি ফেসবুকে ফাঁসও হয়েছিল। প্রথমে ৪ মিনিটের, এরপর ৫০ মিনিটের রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর মেয়র জাহাঙ্গীর দাবি করে আসছিলেন, এসব বানোয়াট।

তবে এডিট করা রেকর্ড বলে দলকে যে ব্যাখ্যা মেয়র জাহাঙ্গীর পাঠিয়েছিলেন, তা মেনে নেয়নি আওয়ামী লীগ।

দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের আগের দিনও মেয়র নিউজবাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন। দাবি করেছেন, তিনি নির্ভার আছেন। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটি মেনে নেয়ার কথাও বলেন তিনি।

তবে দলীয় সভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার পর মেয়র আর ফোন ধরছেন না। তার ব্যক্তিগত সহকারী আশরাফুল রানার ফোনটিও বেজে চললেও তা তিনি ধরেননি।

এ বিভাগের আরো খবর