দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা একবার প্রয়োগ করে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে বাড়ি ফেরার সুযোগ দেয়ার পর একই ধারা আবার ব্যবহারের সুযোগ নেই বলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাকে ‘ডাহা মিথ্যা’ বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তবে আইনমন্ত্রীর আইনের বইয়ে কোথায় এটা লেখা আছে, সেই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট জবাব না দিয়ে বিএনপি নেতা দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে তাদের নেত্রীর সাজা পুরোটাই মওকুফ করে দিতে পারেন।
শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন ফখরুল।
২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়ার দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত হওয়ার পর ২০২০ সালের মার্চে মুক্ত হন খালেদা জিয়া। তাকে কারাগার থেকে বাসায় ফেরার সুযোগ দেয়া হয় দেশের বাইরে যাবেন না- এমন শর্তে।
গত এপ্রিলে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে যেতে দেয়া হবে না।
আইনমন্ত্রী পরদিন সংসদে বলেন, ৪০১ ধারায় নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া বিষয় নিয়ে পুনরায় বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের আইনের বইয়ে এটা নেই।
তিনি বলেন, ‘ওনারা যদি দেখাতে পারেন, আমরা তা বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এটা আইনের বইয়ে নেই। ওনারাও দেখাতে পারবেন না, বিবেচনার প্রশ্নই আসে না।’
আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘আইনমন্ত্রী বললেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর আইনি সুযোগ নেই। এটা ডাহা মিথ্যা কথা। আইনি সুযোগ রয়েছে। যে ফৌজদারি আইনের ৪০১ ধারার কথা বলছেন, সেখানেই বলা আছে যে সরকার চাইলে তাকে মুক্তি দিতে পারেন, বিদেশে পাঠাতে পারেন চিকিৎসার জন্য, সরকার চাইলে পুরোপুরি মওকুফ করে দিতে পারেন।’
খালেদা জিয়ার জীবন শেষ করে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য তো একটাই, খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে, এখন তাকে জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা, চক্রান্ত করা হচ্ছে। সে কারণে তারা তাকে এই সুযোগ দিতে চাচ্ছে না।’
ফখরুল ২০-দলীয় জোটের শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টি- এনপিপির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামও আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন।