দুই মাস আগেই চলতি বছরের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ চা বোর্ড। ২০২১ সালে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭ কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার কেজি চা। অক্টোবরের মধ্যে উৎপাদন হয়েছে ৭ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার কেজি। ১৬৭টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগান থেকে এই পরিমাণ চা উৎপাদন হয়েছে।
চা বোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগস্টেই উৎপাদন হয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৮৭ হাজার কেজি চা; যা রেকর্ড। ২০২০ সালের অক্টোবরে ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৬ হাজার ও ২০১৯ সালের অক্টোবরে উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার কেজি চা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ও ২০১৯ সালে উৎপাদিত হয়েছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ ৬৯ হাজার কেজি।
অনুকূল আবহাওয়া, সরকারের সহায়তা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের পর্যবেক্ষণ, মালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় উৎপাদন বেড়েছে বলে জানিয়েছে খাতসংশ্লিষ্টরা।
চা বোর্ড ও বাগানমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চা উৎপাদনে রেকর্ড সাফল্যের নেপথ্যে আছে গত এক দশকে সরকার ও বাগানমালিকদের নেয়া নানা পদক্ষেপ।
উত্তরাঞ্চলে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর এবং পার্বত্য জেলা বান্দরবানে চা চাষ বাড়ছে। পরিত্যক্ত অনেক বাগান চাষের আওতায় এসেছে। এ ছাড়া কয়েক বছর ভালো দাম পাওয়ায় বাগানমালিকেরাও নতুন নতুন বিনিয়োগে আগ্রহী হয়েছেন।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘কোভিড পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। চা শিল্পের জন্য বাগানগুলোকে ১২০ কোটি টাকা আর্থিক প্রণোদনা বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, রপ্তানিতে প্রণোদনা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, চা-শ্রমিকদের নির্ধারিত সময়ে মজুরি পরিশোধ, রেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় এ বছর উৎপাদন অনেক ভালো। অক্টোবরের রেকর্ড উৎপাদন চা শিল্পের জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে মোট চা উৎপাদন হয়েছে প্রায় আট কোটি কেজি। আগামী দুই মাসে উৎপাদনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছর দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ চা উৎপাদন হতে পারে।’
লন্ডনভিত্তিক ‘ইন্টারন্যাশনাল টি কমিটি’ প্রকাশিত সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চা উৎপাদনে শীর্ষ দেশ চীন। দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। এই তালিকায় নবম স্থানে বাংলাদেশ।