দুই সতিনের ভোটযুদ্ধে জমে উঠেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের নির্বাচনি পরিবেশ। সংরক্ষিত নারী আসনটি পেতে তারা দুজনসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নিয়ে মুখরোচক আলোচনা সদরজুড়ে।
উপজেলার চন্দ্রখানা বুদারবান্নি গ্রামের ফজলু কসাইয়ের তিন স্ত্রী। তাদের মধ্যে এবারের ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন দুজন।
প্রথম স্ত্রী আঙ্গুর বেগম কলম প্রতীক ও ছোট স্ত্রী জাহানারা বেগম তালগাছ প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। আর মেজো স্ত্রী নাজমা বেগম আঙ্গুরের পক্ষে প্রচারে নেমেছেন। এমনকি ফজলুও প্রথম স্ত্রীকে সমর্থন দিচ্ছেন।
কারো সমর্থন না পেলেও পুরোদমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন জাহানারা।
এ বিষয়ে ফজলু বলেন, ‘আমার ছোট স্ত্রী জাহানারা বেগম আগের ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়েছিল। এবারের নির্বাচনে জনগণ আমার প্রথম স্ত্রী আঙ্গুর বেগমকে সমর্থন দিয়েছে। এ জন্য আমিও তার পক্ষে সমর্থন দিয়েছি। ছোট স্ত্রীকে নিষেধ করার পরও সে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করেনি। সে একা একা ভোটের মাঠে কাজ করছে।’
আঙ্গুর বেগম স্বামী ও মেজ সতিনের সমর্থন পেয়ে বেশ খুশি। তিনি বলেন, ‘আমরা দুই সতিন এবার ভোটে অংশ নিয়েছি। গত ইউপি ভোটে আমার সতিন হেরে গিয়েছিল। এবারের নির্বাচনে আমার স্বামী এবং ভোটাররা নতুন মুখ হিসেবে আমাকে সমর্থন করায় আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। আশা করি, ভোটাররা আমাকে নিরাশ করবে না।’
ঘরের মানুষ পাশে না দাঁড়ালেও জনগণের ওপর আস্থা হারাননি জাহানারা বেগম। তিনি বলেন, ‘গত ইউপি নির্বাচনে আমার স্বামীর সমর্থন নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলাম। সেবার আমি কয়েক ভোটে হেরে দ্বিতীয় হয়েছিলাম। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার সতিন আঙ্গুর বেগম স্বামীকে ফুসলিয়ে প্রার্থী হয়েছে।
‘নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়াতে আমাকে চাপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু আমি গত চার-পাঁচ বছর ধরে ভোটের জন্য কাজ করে এসেছি। তাই স্বামীর সমর্থন না পেলেও আমার পাশে আমার ভোটাররা রয়েছে। আমি আশাবাদী, আমি জয়লাভ করব।’
বড় সতিনকে কেন সমর্থন দিচ্ছেন? এ প্রশ্নে ফজলুর মেজো স্ত্রী বলেন, স্বামী বড়জনকে সমর্থন দিচ্ছেন বলে তিনিও তার হয়ে কাজ করছেন।
হাটবাজার, চায়ের দোকান সবখানেই মুখরোচক আলোচনা এই ঘরোয়া নির্বাচনি লড়াই নিয়ে।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার বুলবুলি আকতার জানান, তিনি এখনও ঠিক করতে পারেননি কাকে ভোট দিবেন।
একই ওয়ার্ডের ভোটার মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘সতিনে সতিনে লড়াইয়ে আমরা ভোটাররাই বিপদে পড়ে গেছি। কাকে ভোট দেব আর কাকে ভোট দেব না বুঝতে পারছি না।’
৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আকতার হোসেন বলেন, ‘দুই সতিন দাঁড়ানোয় হাস্যকর পরিস্থিতি হয়েছে।’
তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে এই ইউনিয়নে ভোট হবে আগামী ২৮ নভেম্বর।