করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা কিনতে সরকারের ব্যয় নিয়ে জাতীয় সংসদে কোনো তথ্য দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। নন-ক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট করে টিকা কেনায় খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না বলেও মন্তব্য তার।
জাতীয় সংসদের চলমান অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপন হয়।
জাতীয় পার্টির সাংসদ সৈয়দ আবু হোসেন ও সরকারি দলের সাংসদ আবুল কালাম আজাদও করোনার টিকা কিনতে সরকারের ব্যয় নিয়ে জানতে চান।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘চীন, ভারত ও কোভ্যাক্স থেকে সর্বোচ্চ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মতামত এবং অর্থ বিভাগ, সিসিজিপি ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ সততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে ভ্যাকসিন ক্রয় করা হয়েছে। নন-ক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ভ্যাকসিন ক্রয় করায় মহান জাতীয় সংসদে অর্থ খরচের হিসাব প্রকাশ করা সমীচীন হবে না।’
সরকারি দলের সাংসদ আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে মোট ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ডোজ টিকার সংস্থান করা হয়েছে।
১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৫৪ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৫ কোটি ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৪ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫ হাজার ১৯০ জনকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা প্রদান করা হয়েছে।
লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকান সাড়ে ১২ হাজার
এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ওষুধের দোকান ১২ হাজার ৫৯২টি বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ভোলা-৩ আসনের সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্স ছাড়া দোকান শনাক্ত ও লাইসেন্স দেয়া চলমান প্রক্রিয়া। ৫৫ জেলা কার্যালয় ও ৮ বিভাগীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে সারা দেশে ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত দোকান পরিদর্শন করেন।’
লাইসেন্স ছাড়া দোকান শনাক্ত হলে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘লাইসেন্সবিহীন দোকানের মালিকদের নির্দিষ্ট ক্রাইটেরিয়া পূরণ করে ড্রাগ লাইসেন্স গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।’
ময়মনসিংহ ১১ আসনের সাংসদ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য নিরাপত্তার স্বার্থে ওষুধের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। নকল-ভেজাল ওষুধ বিক্রি প্রতিরোধে কঠোর সরকার। আর নকল ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের বিরুদ্ধে সরকার নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে।’
২০২০-২১ অর্থবছরে মোবাইল কোর্টে ১ হাজার ৭১৫টি মামলার পাশাপাশি ৭ কোটি ৫৮ লাখ ১০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে বলেও সংসদে তথ্য দিয়েছেন তিনি।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৪৬টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে হোমিও ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ১৭টি, হারবাল ওষুধ উৎপাদনকারী ৪টি, অ্যালোপ্যাথিক ৫টি, ইউনানি ৬টি ও আয়ুর্বেদিক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ১৪টি। একই সময়ে ১৪টি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ স্থগিত করা হয়।