শ্লীলতাহানির মামলায় সবুজবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন দাসের জামিন বাতিলের আবেদন নাকচ করেছে আদালত।
ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরার আদালত বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।
জামিন বাতিলের আবেদন করলেও বৃহস্পতিবার শুনানিতে মামলার বাদী বা তার পক্ষের কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না।
যার ফলে শুনানি নাই মর্মে আদালত আবেদনটি নাকচ করে দেয় বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন সবুজবাগ থানার (নারী ও শিশু) আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সদস্য আতিয়ার রহমান।
এ সময় চিত্তরঞ্জন দাসের পক্ষে শুনানি করার জন্য আদালতে উপস্থিত ছিলেন শেখ জসিম উদ্দিন।
জামিন বাতিলের আবেদনে বলা হয়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর আসামি চিত্তরঞ্জন দাসের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় চিত্তরঞ্জন দাসের লোকজন মামলার বাদীর ননদকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ হুমকিধমকি দেন। এ বিষয়ে ওই দিনই কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
আবেদনে আরও বলা হয়, ২১ অক্টোবর চিত্তরঞ্জন দাস জামিন পান। এরপর আসামিপক্ষের লোকজন বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকিধমকি প্রদান করে আসছেন। বিষয়টি নিয়ে বাদী থানায় গেলে কর্তৃপক্ষ জিডি বা মামলা গ্রহণ করেনি। এ জন্য আসামিকে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো আবশ্যক।
এদিন মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিল, কিন্তু সবুজবাগ থানা পুলিশ প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেনি। এ জন্য আদালত আগামী ৬ ডিসেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর শ্লীলতাহানির একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ওই নারী সবুজবাগ থানায় চিত্তরঞ্জন দাসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেন। এজাহারে তিনি নিজেকে গণমাধ্যমকর্মী বলে উল্লেখ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সবুজবাগ কালীবাড়ি রাস্তাসংলগ্ন একটি দোকান ওই নারীর শ্বশুরের। তার পাশের চা দোকানদার নিজের দোকান সংস্কার করতে চাইলে কাউন্সিলর চিত্তরঞ্জন দাস গরিব চা দোকানদারের কাছে ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন।
চাঁদার ব্যাপারে সত্যতা যাচাই করার জন্য ওই নারী রাত পৌনে ৮টার দিকে চিত্তরঞ্জন দাসকে মোবাইলে ফোন দেন। চিত্তরঞ্জন দাস তাকে রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে তার রাজারবাগ কালীবাড়ি কার্যালয়ে যেতে বলেন।
রাত পৌনে ১০টার দিকে ওই নারী স্বামীসহ সেখানে যান। চাঁদার বিষয়ে জানতে চাইলে চিত্তরঞ্জন দাস দু-চারটি কথা বলে তাকে পাশের কক্ষে বসতে বলেন। এর একটু পর চিত্তরঞ্জন দাস ওই কক্ষে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন এবং ওই নারীকে বসা থেকে উঠে দাঁড়ানোর জন্য বলেন। ওই নারী উঠে দাঁড়ালে চিত্তরঞ্জন দাস তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করে তাকে কুপ্রস্তাব দেন।
এ সময় মানসম্মানের ভয়ে ওই নারী কোনো চিৎকার করেননি বলে এজাহারে উল্লেখ করেন।