নওগাঁ শহরে পুলিশ ও পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। সংঘর্ষে নওগাঁ সদর থানার দুই পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সন্ধ্যার দিকে এ সংঘর্ষ ঘটে। এ সময় পুলিশের একটি ভ্যান ও একটি বাস ভাঙচুর করেন পরিবহন শ্রমিকরা। পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে পুলিশ।
নওগাঁ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যায়ভাবে এক মোটরশ্রমিককে আটক ও শ্রমিকদের ওপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’
পুলিশ জানায়, বিকেল ৫টার দিকে নওগাঁ পুলিশ লাইনসের পাশে মশরপুর এলাকায় নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে নওগাঁ ট্রাভেলসের একটি বাসের ধাক্কায় এক বাইকে আরোহী আহত হন। এ ঘটনায় ওই আরোহী নওগাঁ সদর থানায় অভিযোগ করলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই বাস চালক সুলেমান আলীকে আটক করতে বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে যায় পুলিশ।
এ সময় শ্রমিকেরা পুলিশকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। ওই বাসচালককে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় শ্রমিকেরা বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের পাশে প্রধান সড়কে অবস্থান নেন এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন।
পুলিশ আরও জানায়, এ সময় পুলিশ ও শ্রমিকদের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলে এই সংঘর্ষ।
এতে আহত হয়েছেন নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) রাজিবুল ইসলাম ও এক কনস্টেবল।
আহতদের মধ্যে পাঁচজন পরিবহন শ্রমিক নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
শ্রমিক নেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দুর্ঘটনায় বাসচালকের কোনো দোষ ছিল না। মোটরসাইকেলের চালক দ্রুতগতির বাসটি ওভারটেক করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। তারপর পুলিশ ওই বাসচালককে আটক করে নিয়ে যায়। আমরা বাধা দিতে গেলে পুলিশ অন্যায়ভাবে মারধর করে এবং গুলি ছোড়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের একজন শ্রমিক চোখে আঘাত পেয়েছেন। তার চোখটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দায়ী পুলিশদের সাজা না হওয়া পর্যন্ত জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’
নওগাঁ সদর থানার ওসি (তদন্ত) রাজিবুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাসচালক সুলেমান আলীকে আটক করে নেয়ার পথে শ্রমিকেরা তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। তারা আমাদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। এতে আমি ও একজন কনস্টেবল আহত হয়েছি। এখন টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’