বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৭৭ সালে জিয়ার আদেশে কত হত্যা, তথ্য চাই: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৭ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:৪৮

‘একেকটা ক্যু হয়েছে আর কত মানুষ মারা গেছে, কত মানুষকে যে ফাঁসি দেয়া হয়ছে, সে হিসাবটাও পাওয়া যায়নি। কোনো সাংবাদিকও খোঁজ করেনি। আপনাদের কিছুটা হলেও চেতনা ফিরেছে। কথাটা এখন‍ তুলেছেন। আশা করি, এ ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ করবেন, কীভাবে জিয়াউর রহমান এই দেশের মানুষেকে হত্যা করেছে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৭ সালে কথিত অভ্যুত্থান চেষ্টায় সেনাবাহিনীর কত জনকে কোর্টমার্শালের নামে হত্যা করা হয়েছে, সেই সংখ্যাটি বের করার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সে সময় কারাগারে ফাঁসি দেয়া ছাড়াও গুলি করে খাল-বিলে ফেলে দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি সংশয় প্রকাশ করে এও বলেছেন, সবার নাম পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।

গণমাধ্যকর্মীরাও এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে এগিয়ে আসবেন বলে আশা করছেন সরকার প্রধান। বলেন, ‘একেকটা ক্যু হয়েছে আর কত মানুষ মারা গেছে, কত মানুষকে যে ফাঁসি দেয়া হয়ছে, সে হিসাবটাও পাওয়া যায়নি। কোনো সাংবাদিকও খোঁজ করেনি।

‘আপনাদের কিছুটা হলেও চেতনা ফিরেছে। কথাটা এখন‍ তুলেছেন। আশা করি, এ ব্যাপারে আরও তথ্য সংগ্রহ করবেন, কীভাবে জিয়াউর রহমান এই দেশের মানুষেকে হত্যা করেছে।’

সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জেলখানায় যেসব ফাঁসি দেয়া হয়েছে, সেটা হয়ত পাওয়া যাবে। তবে কোর্ট মার্শাল করে যাদের ফায়ারিং স্কোয়াডে দেয়া হছে, তা পাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’

গত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে গত ৩ নভেম্বর দুপুরে বিমান বাংলাদেশ ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী। এই সম্মেলন ছাড়াও লন্ডন ও প্যারিসেও রাষ্ট্রীয় সফর করেন তিনি। দেশে ফেরেন ১৪ নভেম্বর।

শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে গেলে বরাবর গণমাধ্যমের সামনে আসেন। লিখিত বক্তব্যের শুরুতে সফর সম্পর্কে একটি বিবৃতি দেয়া হয়। পরে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাব দেন। এই প্রশ্নোত্তর পর্বে বরাবরই দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রাধান্য পায়।

প্রথমেই ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনীতে সংঘটিত ঘটনার প্রসঙ্গে কথা বলেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবেদ খান।

১৯৭৭ সালে জাপানের উগ্রপন্থি গোষ্ঠী ‘রেড আর্মির’ সদস্যরা জাপান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান ছিনতাই করে ঢাকা বিমানবন্দরে (বর্তমান পুরাতন বিমানবন্দর) অবতরণ করিয়েছিল। ওই ঘটনার অবসানের ব্যবস্থা নিতে তৎকালীন বিমানবাহিনী প্রধানসহ বিমান বাহিনীর বিরাট একটা অংশ সার্বক্ষণিকভাবে কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

১ অক্টোবর যখন বিমান ছিনতাই ঘটনার অবসান ঘটে, সেই রাতে জিয়াউর রহমানের অনুগত বাহিনী ঢাকা সেনা ও বিমান বাহিনীর ছাউনিতে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। তারা শত শত ঘুমন্ত সৈনিককে ব্যারাক থেকে অস্ত্রের মুখে বের করে নিয়ে আসে এবং পরে তাদেরকেই অভুত্থানের অভিযাগে ক্যান্টনমেন্টের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে হত্যা করে।

সম্প্রতি স্বজন হারা মানুষরা নানা কর্মসূচিতে সেই সময়ের ঘটনাবলী তুলে ধরে বিচার ছাড়াও আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি তুলছেন।

আবেদ খান বলেন, ‘১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর সেনাবাহিনীতে হত্যাযজ্ঞ, স্বজনরা আন্দোলন করছেন, কিন্তু তারা সুরাহা পাচ্ছেন না। এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কমিশন হবে বলে আগে বলেছিলেন। এ বিষয়ে আমি কি আপনার কাছ থেকে জানতে পারি কমিশন করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বহুদিন পরে হলেও মানুষের মনে প্রশ্নটা জেগেছে। জাতির জনকে হত্যার পর সেনাবাহিনীতে ১৯টি ক্যু হয়। সেনাবহিনীর হাজার হাজার সৈনিক ও অফিসার, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধারা মারা যায়।’

তিনি বলেন, ‘এই হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি নিজে মৃত্যুদণ্ড দিন প্রসহনমূলক বিচারে। কেবল ফাঁসির দণ্ড নয়, সামরিক আদালতে বিচার করে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।’

‘প্রকৃতপক্ষ কত মানুষ মারা গেছে, কত পরিবার লাশ পায়নি, এ ব্যাপারটা কখনও সেভাবে কেউ তুলে ধরেননি’- উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতকাল পর বিষয়টি সামনে এসেছে, এটাই বড় ব্যাপার।’

রামপুরা টিভি সেন্টারে সে সময় খাল- বিল ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এও জানান, সেখানেও গুলি করে মেরে ফেলে রাখা হতো।

‘পরিবারগুলার প্রতি সমবেদনা আছে। আমিও তো স্বজন হারিয়েছি’- এটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বাবা-মা ভাই হত্যার বিচার পাইনি, মামলাও করতে পারিনি। ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর আমাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। যখন আমি ক্ষমতায় আসতে পেরেছি, ইনডেমনিটি অদ্যাদেশ বাতিল করে মামলা করতে পেরেছি। আমাদের পরিবারের কোনো সদস্যের অধিকারটুকুও ছিল না আমরা একটা মামলা করি, বিচার চাই।’

এ বিভাগের আরো খবর