বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কত টাকা ভর্তুকি দেব, তেলের দাম বৃদ্ধির প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১৭ নভেম্বর, ২০২১ ১৭:২৯

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, কত টাকা ভর্তুকি দেয়া যায়? তাহলে বাজেটের সব টাকা ভর্তুকিতেই দিয়ে দেব? এরপর আর কোনো উন্নয়ন হবে না দেশে। সেটাও দেখতে হবে। কারণ উন্নয়নের টাকা সব চলে যাবে ভর্তুকি দিতে।’

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশে পণ্যটির দাম বাড়ানোর বিকল্প ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, যে পরিমাণ ভর্তুকি দেয়া হয়, তা আরও বাড়ানো হলে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলবে।

সাম্প্রতিক বিদেশ সফর নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক শাহজাহান সরদারের করা এক প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান এ কথা বলেন।

বুধবার গণভবনে করা এই সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার কাছে প্রশ্নটা ছিল এমন, ‘আপনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন, ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। পরে বাসের ভাড়া, লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। জিনিসপত্রের দামও অনেক বেড়ে গেছে। কৃষকের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়বে। এই বাড়তি দাম মিনিমাইজের বা প্রত্যাহার করার কোনো চিন্তা আছে কি না।’

জবাবে সরকারপ্রধান পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনাদের কি ধারণা আছে বছরে কত টাকা ভর্তুকি দিতে হয়? সাংবাদিকরা কি জানেন?

শাহজাহান সরদার বলেন, ‘২৩ হাজার কোটি টাকা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি ঠিক বলেছেন, ২৩ হাজার কোটি টাকা। তবে সেটা ডিজেলে। সব মিলিয়ে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকি। কৃষককে ডিজেলে বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকি।’

তিনি বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের তো তেল কিনে আনতে হয়…প্রশ্নটা হচ্ছে, ডিজেলের দাম যখন বেড়ে গেছে, প্রতিবেশী দেশেও বেড়ে গেছে। যত বেশি গ্যাপ থাকবে, পূরণ করব কী দিয়ে? আর কত টাকা ভর্তুকি আমরা দিতে পারব?’

বিদ্যুৎ উৎপাদনেও ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘একসময় বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। আমরা বিদ্যুৎ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি, কিন্তু বিদ্যুতের জন্যও ভর্তুকি দিতে হচ্ছে, উৎপাদন খরচ তুলতে পারছি না।’

গ্যাসে ভর্তুকির প্রসঙ্গও তোলেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘গ্যাসের সমস্যা সমাধানে এলএনজি আমদানি করছি। আমদানি করতে পাইপলাইন করতে, স্টেশন করতে কত টাকা গেছে? পরে কত খরচ হয়? ৬০ টাকা খরচ হয়, আমরা ৯ টাকায় পৌঁছে দিচ্ছি। ভর্তুকি দিচ্ছি। বাস্তবতা তো বুঝতে হবে।’

‘আপনারাই বলুন কত টাকা ভর্তুকি দেয়া যাবে?’ এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, ‘কাজেই আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, কত টাকা ভর্তুকি দেয়া যায়? তাহলে বাজেটের সব টাকা ভর্তুকিতেই দিয়ে দেব? এরপর আর কোনো উন্নয়ন হবে না দেশে, সেটাও দেখতে হবে। কারণ উন্নয়নের টাকা সব চলে যাবে ভর্তুকি দিতে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘উচ্চ মূল্যে কিনে সর্বনিম্ন মূল্যে যে দিচ্ছি, সেখানে বিরাট অঙ্কের যে ভর্তুকি দিচ্ছি, এটার সামঞ্জস্য কীভাবে করব? এটা যদি আমাদের বুদ্ধিজীবীরা বা আপনারা সাংবাদিকরা একটু পরামর্শ দিন, তাহলে আপনারা যেভাবে বলবেন, সেভাবে করে দেব। আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু এই বিষয়টা আপনাদের বিবেচনা করতে হবে।’

তেলের আগের মুনাফার টাকায় কী হয়েছে?

গত কয়েক বছরে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন বা বিপিসির বিপুল পরিমাণ যে মুনাফা হয়েছে, সেই প্রসঙ্গটিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘একসময় লাভ হয়েছে। তা দিয়ে বিপিসির যে লোন ছিল, তার কিছু টাকা পরিশোধ করেছে। এখন আবারও লোন বাড়ছে।’

কৃষকদের নিয়ে সরকারের চিন্তা আছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, কৃষকরা ডিজেল বিশেষ মূল্যে পায়।

তিনি বলেন, ‘যে সার ৯০ টাকা ছিল, সেটি ১৫-১৬ টাকায় পৌঁছে দিচ্ছি। উপকরণ কার্ড দিয়ে দিচ্ছি, যার মাধ্যমে ভর্তুকি যায়…ভর্তুকির টাকা সরাসরি কৃষকের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। তাতে তাদের সাশ্রয় হয়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমাদের যে দায়িত্ববোধ, সে বিষয়ে সবসময় সচেতন। করোনাকালে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত কোনো শ্রেণি-পেশার মানুষ নেই, যাদের আমরা নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা করিনি।’

ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি জানতেন প্রধানমন্ত্রী

বাস-লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশের বাইরে থাকলেও তার সঙ্গে আলোচনা করেই সব করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বাসের ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’

বাস ও লঞ্চের মালিকদের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এই ব্যবসটা করেন তাদেরও তো কষ্ট ছিল; তাদেরও তো লোকসান ছিল। বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে তাদের ব্যবসাটা যেন চালু থাকে, সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।

‘স্বাভাবিকভাবে যখন তেলের দাম বেড়েছে, তারাও একটু সুযোগ নিয়েছে দাম বাড়ানোর। সেই দাম বাড়ানো নিয়েও তাদের যে দাবি ছিল, বিদেশে ছিলাম আমি ঠিক। বিদেশে ছিলাম বলে যে দেশের খবর নিইনি, তা কিন্তু না। আমার সঙ্গে সবসময় আলোচনা ছিল। ফলে বৈঠক করে আলোচনা করে সমঝোতায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাসের ভাড়া একটা যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’

‘আমাদের উপার্জন কী? নিজস্ব কী সম্পদ আছে?’ এসব প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে উন্নত দেশের চেয়ে বাংলাদেশে ভালো আছে।’

তিনি বলেন, ‘অনেক উন্নত দেশে যান, খাদ্যের জন্য হাহাকার। সুপার মার্কেট খালি, জিনিস নাই, কিন্তু আমাদের দেশে সেই হাহাকার দেখেননি। আপনাদের এটাও বিবেচনায় নিতে হবে।’

‘ট্যাক্স দেয় কত মানুষ?’

আয়করের নিম্ন হারের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাই টাকা উপার্জন করে। ট্যাক্স কত দেয়?

‘সংখ্যা কিন্তু খুবই কম। ফাঁকি দেয়ার দিকেই সবার নজর। সেটা হলো বাস্তবতা। সরকারের টাকাটা আসবে কোথা থেকে? তাহলে কি দেউলিয়া হয়ে যেতে হবে?’

এ বিভাগের আরো খবর