চান মিয়া একজন পেশাদার চোর ও ছিনতাইকারী। রাজধানীর মতিঝিল ও আশপাশ এলাকায় সে নিয়মিত চুরি-ছিনতাই করে বেড়ায়। একই এলাকায় সক্রিয় রয়েছে আরো একাধিক ব্যক্তি ও গ্রুপ। এমনই এক গ্রুপের নেতা ছিনতাইকারী ল্যাংরা রাসেলের সঙ্গে চান মিয়ার বিরোধ বাধে।
অপরাধের ‘সাম্রাজ্য’ দখলে রাখা নিয়ে চান মিয়া ও ল্যাংড়া রাসেলের বিরোধ এক সময় বড় আকার ধারণ করে। তখন প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন শ্যালিকার পাঁচ বছর বয়সী ছেলেকে হত্যা করে ল্যাংড়া গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করে চান মিয়া।
ভাসমান পরিবারের শিশু সানি হত্যাকাণ্ডের দু’বছর পর রহস্য উন্মোচন উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ। বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা থেকে চান মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে মতিঝিল গোয়েন্দা পুলিশ।
মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, পাঁচ বছরের শিশু সানি তার মায়ের সঙ্গে পল্টন ও আশপাশ এলাকায় ভাসমান জীবনযাপন করত। সানির মা ঝর্না বেগম চান মিয়ার শ্যালিকা। চান মিয়া হত্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
ডিএমপি গোয়েন্দা প্রধান বলেন, মতিঝিল ও আশপাশের এলাকায় ছিনতাই করা নিয়ে চান মিয়ার সঙ্গে এলাকায় সক্রিয় আরেক ছিনতাইকারী ল্যাংড়া রাসেলের বিরোধ চলছিল। ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর রাতে সানি স্টেডিয়াম এলাকায় অন্য পথশিশুদের সঙ্গে খেলা করছিল। সেখান থেকে শিশুটিকে ডেকে এনে জুসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করায় চান মিয়া। পরে রাত ১১টার দিকে অচেতন শিশুটিকে গুলিস্তান পার্কের নির্জন জায়গায় নিয়ে সে বলাৎকারের চেষ্টা করে। এ সময় সানি চিৎকার শুরু করলে তাকে গলা টিপে হত্যা করে চান মিয়া। পরে লাশ বস্তাবন্দি করে বঙ্গভবনের পাশে পুলিশ বক্সের সামনে ফেলে যায়।
এদিকে শিশু সন্তান রাতভর নিখোঁজ থাকায় সানির মা ঝর্ণা বেগম পরদিন সকালে চান মিয়াকে ঘটনা জানান। চান মিয়া দিনভর শিশুটিকে খোঁজাখুঁজির অভিনয় করে। রাতে এসে সানির মাকে সে জানায় যে বঙ্গভবনের পুলিশ বক্সের কাছে একটি লাশ পাওয়া গেছে। সেখানে গিয়ে তারা সানির মরদেহ শনাক্ত করে। এরপর সানির মাকে দিয়ে পল্টন থানায় তার প্রতিপক্ষ ল্যাংড়া রাশেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করায় চান মিয়া।