আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পায়নি তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংস্থাটি। আগামী ২৪ নভেম্বর প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানির তারিখ দিয়েছে আদালত।
গত ১৭ অক্টোবর আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেন।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অফিস সহকারী রাশেদুল আলম বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
কার্টুনিস্ট কিশোর বর্তমানে জামিনে রয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা পোশাকে অজ্ঞাতপরিচয় ১৬-১৭ জনের বিরুদ্ধে কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের যে অভিযোগ, সেটির প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গত ১০ মার্চ একই আদালতে মামলার আবেদন করেন আহমেদ কবির কিশোর। তবে মামলার আবেদনে কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়।
মামলায় কিশোর উল্লেখ করেন, গত বছর ৫ মে রমনা থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। কিন্তু তার আগে ২ মে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ১৬-১৭ জন সাদা পোশাকধারী তাকে কাকরাইলের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান। কিন্তু তারা কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কাগজ দেখাতে পারেননি। তারা বাসা থেকে মোবাইল, সিপিইউ, পোর্টেবল হার্ডডিস্কও নিয়ে যান।
পরে হাতকড়া ও মুখোশ পরিয়ে নির্জন জায়গায় নেয়া হয় কিশোরকে। সেখানে ৪ মে পর্যন্ত তাকে নির্যাতন করা হয়। তাদের আলাপ-আলোচনায় একজনকে জসিম বলে ডাকতে শুনেন কিশোর।
এজাহারে কিশোর উল্লেখ করেন, তাকে একটি পুরোনো ও স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রচণ্ড জোরে তার কানে থাপ্পড় মারলে কিছুক্ষণের জন্য বোধশক্তিহীন হয়ে পড়েন। বুঝতে পারেন, তার কান দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। তারপর স্টিলের পাত বসানো লাঠি দিয়ে পায়ে পেটাতে থাকে। যন্ত্রণায় অজ্ঞান হয়ে পড়েন কিশোর। এভাবে কয়েক দফা তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। পরে তাকে র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি অসুস্থ হয়ে মারা যান লেখক মুসতাক আহমেদ।