তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে পলাতক বাংলাদেশি নাগরিক শাহিনুর টি আই এম নবীকে হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও গুলশান থানার পুলিশের প্রতি এ নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদের করা আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ব্যারিস্টার ফাইজা মেহরিন।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতে আজকে শুনানি হয়েছে, শুনানি নিয়ে আদালত শিশুসহ বাবাকে আগামী রোববার বিকেল ৩টার মধ্যে হাজির করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
গতকাল মঙ্গলবার ভারতীয় নাগরিক সাদিকা সাঈদের করা আবেদনের ফলে তাদের তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশি নাগরিক বাবা শাহিনুর টি আই এম নবীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট।
শিশুকে নিয়ে বাবা শাহিনুর যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
গত ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট দুই মাসের জন্য ওই শিশুকে ভারতীয় নাগরিক মা সাদিকা সাঈদের হেফাজতে রাখার আদেশ দেয়।
আদেশে বলা হয়, মা ও শিশু মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) ব্যবস্থাপনায় থাকবে। তবে বাংলাদেশি বাবা সপ্তাহে তিন দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিশুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন। এ দুই মাস সাদিকা সাঈদের পাসপোর্ট গুলশান থানায় জমা রাখতে বলা হয়।
মামলা থেকে জানা যায়, ভারতের বিয়ে সংক্রান্ত ওয়েবসাইট থেকে অন্ধ্র প্রদেশের হায়দ্রাবাদের সাদিকা সাঈদ শেখ নামে এক নারীকে বিয়ের জন্য পছন্দ করেন বারিধারার এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান শাহিনুর টি আই এম নবী। মেয়েটি হায়দ্রাবাদের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান।
২০১৭ সালে হায়দারাবাদে তাদের ঘটা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মালোশিয়ার কুয়ালালামপুরে বসবাস শুরু করেন। কয়েক মাস পর ঢাকায় চলে আসেন। এর মধ্যে এই দম্পতির ঘরে ২০১৮ সালে এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। একপর্যায়ে তাদের সংসারে অশান্তি নেমে আসে। সাদিকা শেখকে মারধরের অভিযোগ রয়েছে স্বামী শাহিনুরের বিরুদ্ধে। তাকে ভারতের আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন করে দেন।
বিষয়টি ভারতে মেয়েটির আত্মীয় স্বজনরা জানতে পারেন। তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে ভারতীয় হাই কমিশনে যোগাযোগ করা হয়। তারপরও সমাধান হয়নি। পরে মেয়েটির বোন মানবাধিকার সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ফ্লাড) কাছে আইনি সহায়তা চান।
গত ৮ আগস্ট সাদিকা শেখ ও তার শিশু সন্তানসহ আদালতে হাজির করার নির্দেশনা চেয়ে হেবিয়াস কর্পাস (অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রাখা) রিট করে ফ্লাড পরিচালক ব্যারিস্টার কাজী মারুফুল আলম ও ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক লুলান চৌধুরী।