দেশে ডেটাবেজের ব্যবহার বাড়লে সাইবার আক্রমণের ঝুঁকিও বাড়বে বলে মন্তব্য করে সবাইকে ই-কমার্স সাইট ব্যবহারের আগে নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেছেন, ‘যত বেশি আমাদের দেশে ডেটাবেজ ব্যবহৃত হবে, তত বেশি ঝুঁকি বাড়বে। কিছুদিন আগে আমাদের দেশে ই-কমার্সের জোয়ার বয়ে গেল। সেখানে কেনাটাকা করতে গিয়ে কোটি কোটি মানুষ তাদের প্রাইভেট তথ্য দিয়েছে। এসব ই-কমার্স সাইটের কাছে এখন লাখ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে।
‘এই তথ্যের সিকিউরিটি কী? সেসব ফোন নম্বর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ব্যাকিং, ঠিকানা যদি থার্ড পার্টির হাতে যায়, তাহলে সেসব আপনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারে। এই ঝুঁকি স্বাভাবিক অপরাধের চেয়েও বেশি।’
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সবাইকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে আইজিপি বলেন, ‘যারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেন, সেখানে কোনো ধরনের অপরিচিত মানুষকে অ্যাকসেস দেবেন না। কারও বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে আপনার নিজস্ব নেটওয়ার্কে কাউকে এন্ট্রি দেবেন না। দেখা গেল, ফেসবুকে কারও সঙ্গে এক-দুই দিনের পরিচয়, দেখা করতে বেরিয়ে পড়েন। সেসব ক্ষেত্রে অনেকে ভিকটিম হয়েছেন।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক কারণে অনেকেই এ-সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা-মোকদ্দমা করতে চান না। তরুণী মেয়েরাই মূলত ভুক্তভোগী হচ্ছে বেশি। সমাজ বা সম্মানহানির ভয়ে তারা এটা করতে চায় না। সবচেয়ে মুশকিল হয় তখনই যখন অপরাধীকে শনাক্ত করার পরে ভিকটিম ব্যাকঅফ করে। তাই আমাদের এটা মোকাবিলা করতে হবে। সামাজিক ট্যাবু ভাঙতে হবে।’
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘সাইবার ওয়ার্ল্ডে নানা ধরনের প্রোপাগন্ডায় রাষ্ট্র, ব্যক্তি ও সমাজব্যবস্থা ভুক্তভোগী হচ্ছে। সাইবার বুলিং-সাইবার সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে নারীরা সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। এই প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে বুঝতেই পারেন না, তারা এই সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। যারা এই সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন তারাই বুঝতে পারেন, তারা কী পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছেন। এর ফলে ব্যক্তির মানবিক-মানসিক বিপর্যয় ঘটে।’
সবাইকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের আগে ঝুঁকি এবং নিরাপত্তার বিষয়টি জানতে হবে বলে মনে করেন আইজিপি।