প্রতিদিন অন্তত ৪ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরবের ভিসা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ আল দোহাইলি। বলেছেন, একদিনে সাড়ে ৮ হাজারে বেশি ভিসা দেয়ার রেকর্ডও রয়েছে তাদের দূতাবাসের।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় মঙ্গলবার বাংলাদেশকে সৌদি বাদশাহ সালমান ফাউন্ডেশনের দেয়া ১৫ লাখ ডোজ টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ আল দোহাইলি।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ঢাকা দূতাবাস থেকে দিনে ৪ হাজার বাংলাদেশিকে ভিসা দেয়া হচ্ছে। কোনো কোনো দিন এ সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। একদিনে ৮ হাজার ৬০০ জনকে ভিসা দেয়ারও রেকর্ড আছে।’
বাংলাদেশে বেশির ভাগ মানুষকে দেয়া হচ্ছে চীনের সিনোফার্মের উদ্ভাবিত বিবিআইবিপি-করভি টিকা। এ টিকা এখনও অনুমোদন দেয়নি সৌদি সরকার। ফলে এই টিকা নিয়ে গেলেও মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে প্রবাসীদের।
এ সমস্যা সমাধানে সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে প্রস্তাব রেখেছেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানান, সৌদি আরব বর্তমানে মডার্না, ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা অনুমোদন করছে। সেজন্য বাংলাদেশ থেকে সিনোফার্ম বা সিনোভেক টিকা নিয়ে গেলে সেখানে কোয়ারেন্টিন করতে হয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আজও আমি কথা বলেছি। তাদের বলেছি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়া সব টিকা অনুমোদন দিতে। তারা এ বিষয়ে কাজ করছে। তবে যতদিন এটা অনুমোদন না হবে ততদিন তাদের আইন মানতে হবে।’
সৌদি রাষ্ট্রদূত দোহাইলি বলেন, ‘করোনা বৈশ্বিক সংকট। এই মহামারির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে লড়তে হবে। বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সৌদি সরকারের এই উপহার।
‘আর টিকার নিয়ম সব দেশের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। চীনের ভ্যাকসিন সৌদি আরবে অনুমোদনের বিষয়টি সৌদি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। এটা সময়সাপেক্ষ।’
সৌদি সরকার বাংলাদেশে টিকা উৎপাদনেও সহায়তা করতে চায় বলে জানান জাহিদ মালেক। বলেন, ‘আজও সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল ও টিকা উৎপাদনে সহায়তা করতে চায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে তারা বাংলাদেশে টিকা উৎপাদন শুরু করতে চায়।’
করোনা মোকাবিলায় সৌদি সরকারের সহায়তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, ১৫ লাখ টিকা সস্পূর্ণ বিনা পয়সায় উপহার হিসেবে দিয়েছে তারা। সেই সঙ্গে এক লাখ ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।’