উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে কর্মীদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরদ্ধে।
তবে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম যুবরাজের দাবি, তিনি উসকানি দেননি। নির্বাচনে যদি তার কর্মী মারা যায় তবে তার পরিবারকে ১০ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলেছেন মাত্র।
পুলিশ বলছে, চেয়ারম্যানের বক্তব্য যাচাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।
সিরাজদীখান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট হবে চতুর্থ ধাপে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে সভা-সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রচারমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।
সম্প্রতি এক কর্মী সভায় সিরাজদীখান ইউপির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম যুবরাজের দেয়া বক্তব্য ছড়িয়েছে ফেসবুকে।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পারপাসে একটা লোক মারা যেতে পারে? আমার কর্মীদের লিস্ট আছে। এই কর্মীদের ভেতর যদি কেউ মারা যান তাহলে আমার পক্ষ থেকে ১০ লাখ টাকা তার পরিবারকে দেয়া হবে। আর যদি খুনাখুনি করে হাসপাতালে ভর্তি হন, তাহলে আমি তার সম্পূর্ণ খরচ বহন করব। এমনকি তার সংসারের খরচও আমি চালাব।
‘আমি মাইট্টা ডোরা সাপ। চুপ করে শুয়ে থাকি, আর যখন কামড় মারি তখন মাংসসহ ছিড়ে ফেলি।’
ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
মো. রহিম নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে কর্মীদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন সাইফুল চেয়ারম্যান। আমি মনে করি, এ ধরনের বক্তব্য দেয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’
অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম যুবরাজ বলেন, ‘আমার জন্য নির্বাচন করবে তারা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব। তাই কেউ যদি মারা যায় আমার নির্বাচন করতে গিয়ে তার পরিবারকে আমি ১০ লাখ টাকা দিব। আমি তো কাউকে বলিনি, মাইরা আস তাকে আমি ১০ লাখ টাকা দিব। তাই কেউ যদি মারা যায় আমার কারণে তার পরিবারকে আমি ১০ লাখ টাকা দিব। কেউ যদি আহত হয় তার পাশে আমি দাঁড়াব।
সাইফুল ইসলাম যুবরাজ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। দলের বাসাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম নজরুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘এই ধরনের বাজে বক্তব্য দেয়া মোটেও উচিত না। সাইফুল চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছে কয়েকদিন ধরেই ফেসবুকে সেটা ঘুরছে। এটা আমিও দেখেছি তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে। এতে সহিংসতা হতে পারে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।’
সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমরা কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে দিব না। তাই সবাইকে বলব উসকানিমূলক কথা বলবেন না।’
সাইফুল ইসলামের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি এরকম কোনো কথা বাসাইল ইউপির চেয়ারম্যান বলে থাকেন তাহলে আমরা পর্যবেক্ষণ করে আইনি ব্যবস্থা নেব।’