বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১ মাসে ১০ ঘরে আগুন, কারণ জানে না গ্রামবাসী

  •    
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:১৯

বরগুনার পোটকাখালী গ্রামের লোকজন বলছেন, বিভিন্ন সময় একেক ঘরে আগুন লাগছে। আতঙ্কে অনেকে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন দিনরাত। আগুনের ঘটনার পেছনেও কোনো কারণ আছে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রশাসক। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

খালের পাড় ধরে বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়ন। গত এক মাস ধরে এই ইউনিয়নের পোটকাখালী গ্রামের বাড়িঘরে রহস্যময়ভাবে আগুন লাগছে বলে অভিযোগ লোকজনের। তারা বলছেন কীভাবে আগুন লাগছে তা তারা জানেন না। আগুনে ঘরের আসবাব ও পোশাক পুড়েছে অনেকের, কারও পুড়েছে ঘরের চালা। অনেকে আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।

এর আগে ঠাকুরগাঁওয়ের একটি গ্রামে রহস্যময়ভাবে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে পরে জানা গেছে, পূর্ব বিরোধের জেরে ১২ যুবক এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিষয়টি স্বীকারও করেন।

বরগুনার পোটকাখালী গ্রামের আগুনের ঘটনার পেছনেও কোনো কারণ আছে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রশাসন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এরই মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

এ গ্রামের লোকজন বলছেন, বিভিন্ন সময় একেক ঘরে আগুন লাগছে। আতঙ্কে অনেকে বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন দিনরাত। গৃহবধূরা রান্নাঘর ছেড়ে কাজ করছেন বাইরে। অনেকে সন্তানদের পাঠিয়ে দিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে।

গ্রামবাসী জানান, গত ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আবদুর রহিমের বাড়িতে প্রথম আগুন লাগে। খাটের পাশে ধোঁয়া ও গন্ধ টের পেয়ে তিনি দেখেন, বিছানায় আগুন লেগেছে। দ্রুতই তা নিভিয়ে ফেলা হয়।

পরদিন সন্ধ্যায় রহিমের প্রতিবেশী সেন্টুর ঘরে স্তূপ করে রাখা জামাকাপড়ে আগুন লাগে। এরপর এক সপ্তাহে ওই গ্রামের তিনজনের বাড়িতে বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগে। সবশেষ গত শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে দুইবার দুটি ঘরে পুড়েছে আসবাবপত্র।

আগুন লাগার কারণ খুঁজে না পেয়ে গ্রামবাসী ভাবে এটি অলৌকিক কোনো ঘটনা। অনেকে তান্ত্রিকদের কাছেও যান। তাতেও আগুন লাগা থামেনি। এক মাসে অন্তত ১০ জনের বাড়িতে আগুন লেগেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ওই গ্রামের চা দোকানি আবদুর রহিম জানান, তার ঘরেই এ পর্যন্ত অন্তত ২০ বার আগুন লেগেছে; কখনও বিছানায়, কখনও জামাকাপড়ে আবার কখনও রান্নাঘরে। তার দাবি, আগুনে ঘরের এক-তৃতীয়াংশ আসবাবপত্র পুড়েছে। বাকি যা আছে তা বাইরে সরিয়ে রেখেছেন।

মো. রিপন, মো. সেন্টু, মনসুর আলীসহ কয়েকজন জানান, আগুনের ভয়ে পরিবারের সদস্যদের বাসায় একা রেখে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। কেউ আগুন দিচ্ছে ভেবে পাহারা বসানো হয়। তারপরও আগুন লাগছে। আগুন নেভাতে গিয়ে কারও কারও হাত-পাও পুড়েছে।

এ ঘটনার খবর পেয়ে এরই মধ্যে গ্রাম পরিদর্শন করেছেন বরগুনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা। স্টেশন ম্যানেজার বদিউজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে এমন আগুন লাগা নতুন নয়। দেশের অনেক স্থানেই প্রায়ই এমন ঘটনা শোনা যায়। স্থানীয়রা এটাকে ভৌতিক বলে মনে করেন। এমন ঘটনায় যাতে কারও কোনো ক্ষতি না হয় সে জন্য আমরা সজাগ আছি।’

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রহস্যময় আগুন লাগার বিষয়টি শুনেছি। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে বলেছি। স্থানীয়রা আলৌকিক ভাবলেও বাস্তবতা ভিন্ন। এখানে কী কারণে এমন আগুন লাগছে সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ইউএনও সামিয়া শারমিন জানান, তিনি ঘটনাটি মাত্রই শুনেছেন। সেখানে শিগগিরই পরিদর্শনে যাবেন।

বরিশালের চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক নাজমুল আলম রায়হান জানান, সোডিয়াম বা ম্যাগনেসিয়ামের মতো ধাতুগুলো খুবই বিপজ্জনক এবং দাহ্য। বিশুদ্ধ সোডিয়াম সরাসরি বাতাসের সংস্পর্শে এলেই আগুন ধরে যায় বা বিস্ফোরিত হয়।

তিনি বলেন, ‘ম্যাগনেসিয়ামও দাহ্যতা দেখায়, তবে সোডিয়ামের থেকে কিছুটা কম এবং নিয়ন্ত্রিত। ঘটনাগুলোর বর্ণনা শুনে মনে হয়েছে এ ক্ষেত্রে ম্যাগনেসিয়াম পাউডার বা ম্যাগনেসিয়ামের স্ট্রিপ ব্যবহার করা হয়েছে। এই বস্তু কোনো দাহ্য জিনিসের সংস্পর্শে রেখে দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাতাসের অক্সিজেনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে আগুন জ্বলে উঠবে। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

এ বিভাগের আরো খবর