বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভালো আছে হরিণাকুণ্ডুর সেই দম্পতি

  •    
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:০৭

রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মনে হয় লাইফ পার্টনার্র হিসেবে আমি সর্বোচ্চ মানুষটিকে পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে তাকে আমি পাইছিলাম বলে আমি এখন ভালো আছি।’

স্বামীকে কিডনি দেয়া ঝিনাইদহের সেই গৃহবধূ সেতু খাতুন জানিয়েছেন তিনি সুস্থ আছেন। তবে এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি রাশিদুল ইসলাম। চিকিৎসার জন্য প্রতি মাসেই তাকে ঢাকায় ছুটতে হচ্ছে।

সংসারের চাকা সচল রাখতে নিজ গ্রামে মুদি দোকান দিয়েছেন রাশিদুল। চেষ্টা করছেন প্রতিদিন নিয়ম করে দোকানে বসতে। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে বাকিটা জীবন একটু ভালো থাকার আশায় সবার কাছে দোয়া চেয়েছে তিনি।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হরিশপুর গ্রামের রাশিদুলের সঙ্গে সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাতিভাঙ্গা গ্রামের সেতুর। এই দম্পতির আবু সালাহ নামে তিন বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

বাংলাদেশ আনসার বাহিনীতে চাকরি করতেন রাশিদুল। প্রায় দেড় বছর আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই সময় তাকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হলে তার কিডনি সমস্যা ধরা পরে।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তার দুটি কিডনি বিকল হওয়ার কথা জানান।

চিকিৎসকরা রাশিদুলকে কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা বলেন। কিডনি কিনে প্রতিস্থাপন করার সামার্থ্য ছিল না রাশিদুলের পরিবারের।

সে সময় রাশিদুলের সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মিলে যাওয়ায় ভালোবাসার মানুষটিকে বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিতে রাজী হন সেতু।

রাজধানীর শ্যামলীর ৩ নম্বর সড়কের সিকেডি কিডনি হাসপাতালে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়। সে সময়কার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। কমেন্ট পোস্টে প্রশংসায় ভাসেন স্ত্রী সেতু। হাসপাতালে সাত মাস চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরেন রাশিদুল। এর মধ্যে চলে যায় তার চাকরি।

হাসপাতালের বিছানায় গৃহবধু সেতু খাতুন। ছবি: নিউজবাংলা

চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর পাশাপাশি বেকারত্ব ঘোচাতে বাড়ির পাশে সাতব্রিজ বাজার এলাকায় দোকান দিয়েছেন রাশিদুল।

রাশিদুল বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এখন ভালো আছি। তবে ভারী কাজ করতি পারছিনে। বসে থাকলি তো চলবে না। তাই একটা দোকান নিয়েচি। সারাদিন বসেও কাজ করতি পারিনে। একবেলা দোকানদারি করি।

‘মাসে মাসে ঢাকা যাতি হয়। প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকার ওষুধ কিনতি হচ্চে। টাকা পয়সা নিয়েও সমস্যায় আছি। তারপরও আল্লাহ আমাকে ভালো রেখেচে।’

স্ত্রী সেতুর সম্পর্কে রাশেদুল বলেন, ‘আমার মনে হয় লাইফ পার্টনার্র হিসেবে আমি সর্বোচ্চ মানুষটিকে পেয়েছি। আল্লাহর রহমতে তাকে আমি পাইছিলাম বলে আমি এখন ভালো আছি।’

সেতু খাতুন বলেন, ‘আমি বাঁচলে আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন আমার সঙ্গে সারাজীবন বাঁচে। তিনি যে আমার পাশে আছে এটাই আমার কাছে বড় পাওয়া। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া কইরেন।’

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হুসাইন বলেন, ‘ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাশিদুল-সেতু দম্পতি। প্রকৃতপক্ষে তাদের এই ভালোবাসার উদাহরণ যুগের পর যুগ মানুষের মনে থাকবে।

রাশিদুলকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর