বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কাজ শেষের আগেই সরে যাচ্ছে বেড়িবাঁধের ব্লক

  •    
  • ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ১৩:২২

উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ‘এ প্রকল্পের কাজ যখন শুরু হয়, তখন নদী অনেক দূরে ছিল। কিন্তু নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে কয়েকটি জায়গায় নতুন করে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সে সব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে।’

২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সুপার সাইক্লোন সিডর আঘাত হেনেছিল দেশের উপকূলীয় এলাকায়।

সে সময় ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস, আর ২৪০ কিলোমিটার গতির ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেয় উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা।

সরকারি হিসাবে, সেদিন বাগেরহাটে মারা যায় ৯০৮ জন। তবে সিডরের ভয়াল থাবায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জেলার শরণখোলা এলাকা।

এ সময় শুধুমাত্র শরণখোলার সাউথখালীতে নয় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর সরকারিভাবে প্রকাশ হলেও বেসরকারি মতে এর সংখ্যা ছিল প্রায় ২ হাজার।

সিডরের আঘাতে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পুরো শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়ন। শুরু হয় বাঁধের দাবিতে আন্দোলন। সে সময়ে শরণখোলাবাসীর একটাই দাবি ছিল ‘আমরা ত্রাণ চাই না, টেকসই বেড়িবাঁধ চাই’।

একপর্যায়ে সরকার শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিলোমিটার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প নেয়। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পাউবোর উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বাঁধের কাজ শুরু হয়।

চায়নার সিএইচডব্লিউই নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাঁধ নির্মাণের কাজ পায়। তিন বছর মেয়াদের এই কাজ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার ছিল। কিন্তু দুই দফায় মেয়াদ ও প্রকল্প ব্যয় বাড়িয়ে ৬৯৬ কোটি টাকা করা হয়। নতুন কাজের সময় বেঁধে দেয়া হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।

কাজ শেষ না হতেই বেড়িবাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ব্লক সরে ধসের অভিযোগ উঠেছে। কাজ চলমান থাকার মধ্যেই বলেশ্বর নদের তীরের রায়েন্দা বড়ইতলা, সাউথখালীর তাফালবাড়ী এবং গাবতলা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টের ব্লক সরে গেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদী শাসন না করায়, নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় ভাঙতে ভাঙতে বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে।

গাবতলা এলাকার বাসিন্দা ছালাম খাঁ বলেন, ‘সরকার শত শত কোটি টাকা খরচ করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করছে। অথচ এতে আমাদের মধ্যে স্বস্তি নেই। নদী যেভাবে ভাঙছে যে কোনো মুহূর্তে মূল বাঁধে আঘাত করবে। এজন্য আমারা আতঙ্কে থাকি।’

দক্ষিণ সাউথখালী ইউনিয়নের সদস্য জাকির হাওলাদার বলেন, ‘শত শত প্রাণের বিনিময়ে আমরা বেড়িবাঁধ পেয়েছি। কিন্তু টেকসই বাঁধ হয়নি। কাজের মানও খারাপ। তাছাড়া নদী শাসন না করা হলে এ বাঁধ বেশিদিন টিকবে না।’

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘বাঁধের কাজের মান নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। তারপরও যা হয়েছে, নদী শাসন না হলে এই বাঁধ টিকবে না।’

উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ‘এ প্রকল্পের কাজ যখন শুরু হয় তখন নদী অনেক দূরে ছিল। কিন্তু নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে কয়েকটি জায়গায় নতুন করে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। সে সব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, স্থায়ীভাবে এ সমস্যার সমাধানের জন্য নতুন প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।

এ ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও করোনার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এর মধ্যেই প্রকল্পের ৯০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে বলে জানান আশরাফুল আলম।

এ বিভাগের আরো খবর