বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাজ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা: রুশনারা ও রুপাকে পাশে চায় বিজিএমইএ

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২১ ২৩:১৮

বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পেয়ে থাকে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, এলডিসি থেকে উন্নয়নশীর দেশের তালিকায় উন্নীত হওয়ায় ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশের আর এই সুবিধা পাওয়ার কথা নয়।  

স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণের পরও যুক্তরাজ্যের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশি বংশদ্ভুত দুই এমপি রুশনারা আলী এবং রুপা হকের সহযোগিতা চেয়েছে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালকিদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ।

রোববার লন্ডনে এক বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান রুশনারা আলী এবং রুপা হকের কাছে এই সহায়তা চেয়েছেন বলে বিজিএমইএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। যুক্তরাজ্যের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধা পেয়ে থাকে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, এলডিসি থেকে উন্নয়নশীর দেশের তালিকায় উন্নীত হওয়ায় ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশের আর এই সুবিধা পাওয়ার কথা নয়।

বাংলাদেশ সরকার ও পোশাক শিল্প মালিকরা এই সুবিধা অব্যাহত রাখতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সে ব্যাপারেই বাংলাদেশি বংশদ্ভুত দুই এমপি রুশনারা আলী এবং রুপা হকের সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে এলডিসি থেকে উত্তরণ, শূল্ক ব্যবস্থায় সম্ভাব্য পরিবর্তন এবং এলডিসি পরবর্তী যুগে কিভাবে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের বাজারে তার প্রশোধিকার ধরে রাখতে পারে, সে বিষয়ে যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তোরনের পরও বাংলাদেশের জন্য যেন শূল্ক সুবিধা অব্যাহত থাকে, সে বিষয়ে সহযোগিতা ও সমর্থন প্রদানের জন্য রুশনারা আলী এবং রুপা হককে অনুরোধ জানান।

বৈঠকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরাও উপস্থিত ছিলেন।

ফারুক হাসান বাংলাদেশের উন্নয়নে অনাবাসী বাংলাদেশীদেরকে (এনআরবি) যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, অনাবাসী বাংলাদেশীরা দক্ষতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা, জ্ঞান এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের উন্নয়নকে তরান্বিত করার ক্ষেত্রে ব্যাপক অবদান রাখতে পারেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশীদের মধ্যে অনেকেই ওই দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। আবার অনেকেই রাজনীতিবিদ এবং সংসদ সদস্য হিসেবে সরকারের উপর ব্যাপক প্রভাব রাখেন। পাশাপাশি, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী অভিবাসী শিক্ষাবিদ, গবেষক, উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং অন্যান্য মর্যাদাপূর্ন পদে আসীন রয়েছেন।

‘তারা বাংলাদেশের আর্থিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অবস্থার কাঠামোদানে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করতে পারেন।’

বিজিএমইএ সভাপতি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বাংলাদেশীদের উচ্চ মূল্য সংযোজিত পণ্য এবং নন-কটন টেক্সটাইলসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার বিষয়ে সহযোগিতা প্রদানের জন্য যুক্তরাজ্যের দুই সংসদ সদস্যকে অনুরোধ জানান।

ফারুক হাসান যুক্তরাজ্যের এমপিদেরকে নিরাপত্তা, টেকসই উন্নয়ন এবং সামাজিক কমপ্লায়েন্স প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে যে দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি হয়েছে সে বিষয়েও অবহিত করেন।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এ বিষয়ে বাংলাদেশের অনুকূলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা নিতে এমপি রুশনারা আলী এবং রুপা হকের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাকের অন্যতম বড় বাজার যুক্তরাজ্যে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া না গেলে কর্মসংস্থান এবং নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

বাংলাদেশের ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হওয়ার কথা ছিল। জাতিসংঘের উন্নয়ন নীতি সংক্রান্ত কমিটি (ইউএনসিডিপি) নির্ধারণ করে কোন দেশ এই তালিকায় থাকবে। মহামারি করোনার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এই সময়সীমা পিছিয়ে ২০২৬ সালে নিয়েছে ইউএনসিডিপি।

বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর কোন দেশের পণ্য আর শুল্ক্কমুক্ত রপ্তানি সুবিধার আওতায় থাকে না। সে হিসেবে ২০২৬ সালের পর যুক্তরাজ্যে পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। বর্তমানে অন্যান্য উন্নত দেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাজারেও পণ্য রপ্তানিতে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধা রয়েছে।যুক্তরাজ্যে বছরে গড়ে ৩৫০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়।

চলতি অর্থ বছরের গত তিন মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ১০ শতাংশ। ১০৪ কোটি ডলারের বেশি মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে এ সময়ে দেশটিতে। গত অর্থ বছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ৯৪ কোটি ডলারের কিছু বেশি।

বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি বাংলাদেশে মূল্য সংযোজিত পণ্য বিশেষ করে কৃত্রিম আঁশের পোশাকে বিনিয়োগ করার জন্য যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার অনুরোধ জানান। পোশাক খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে বাংলাদেশের বিভিন্ন সাফল্য এবং স্বীকৃতির বিভিন্ন তথ্যও তুলে ধরেন তিনি।

এ বিভাগের আরো খবর