বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির দারুণ আয়

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২১ ২০:৪০

বেশির ভাগই গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করে লভ্যাংশও বাড়িয়েছিল। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেগুলোর আয় আরও বাড়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বেশির ভাগ কোম্পানিই নতুন অর্থবছরের শুরুতে আয় বাড়াতে পেরেছে। একটি কোম্পানি বাড়াতে না পারলেও গত বছরের আয় ধরে রাখতে পেরেছে বলা চলে।

রোববার এই খাতে তালিকাভুক্ত বেশ কিছু কোম্পানি গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম তিন মাসের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে, এমন কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম।

এসব কোম্পানির মধ্যে বেশির ভাগই গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করে লভ্যাংশও বাড়িয়েছিল। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেগুলোর আয় আরও বাড়ার চিত্র দেখা যাচ্ছে।

শাহজিবাজার পাওয়ার

এই কোম্পানিটির আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ১৩ পয়সা আয় করতে পেরেছে কোম্পানিটি। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে এই আয় ছিল ১ টাকা ৪৫ পয়সা। এই হিসেবে আয় বেড়েছে ৬৮ পয়সা বা ৪৬.৮৯ শতাংশ।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৬ টাকা ৫৩ পয়সা আয় করে ২ টাকা ৮০ পয়সা নগদ ও ৪ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল কোম্পানিটি। আগের বছর এই আয় ছিল ৪ টাকা ৩৮ পয়সা।

অর্থাৎ আয় বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা নতুন বছরেও ধরে রাখতে পেরেছে কোম্পানিটি।

আয়ের পাশাপাশি তিন মাসে সম্পদও বেড়েছে কোম্পানিটির। জুন শেষে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ যেখানে ছিল ৩৮ টাকা ৫ পয়সা, সেটি সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা ১৭ পয়সা।

ডরিন পাওয়ার

গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় কোম্পানিটির আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪০.৭৯ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৮৩ পয়সা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় ছিল ২ টাকা ১ পয়সা। আয় বেড়েছে ৮২ পয়সা।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় দেড় গুণ আয় করে ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি। এর মধ্যে ১২ শতাংশ বোনাস ও ১৩ শতাংশ নগদ।

কোম্পানিটি সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে আয় করে ৮ টাকা ৯ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ারের বিপরীতে আয় ছিল ৬ টাকা ৮ পয়সা।

জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ৪৪ টাকা ৬৮ পয়সা। সেটি আরও বেড়ে হয়েছে ৫১ টাকা ২৪ পয়সা।

বারাকা পতেঙ্গা

অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করতে পেরেছে ১ টাকা ১৩ পয়সা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি এই আয় ছিল ১ টাকা ৭ পয়সা। আয় বেড়েছে ৫ শতাংশের মতো।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৬ টাকা ৪৭ পয়সা আয় করে সাড়ে ১২ শতাংশ, অর্থাৎ ১ টাকা ২৫ পয়সা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি।

জুন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ ছিল ২৮ টাকা ৪৮ পয়সা। সেটি আরও বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা ১৭ পয়সা।

জিবিবি পাওয়ার

এই কোম্পানিটিও আয় বাড়িয়ে অর্থবছর শুরু করতে পেরেছে।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি ৩৫ পয়সা আয় করা কোম্পানিটি গত বছর একই সময়ে আয় করতে পারে শেয়ারে ৩১ পয়সা। কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ৪ পয়সা বা ১২.৯০ শতাংশ।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৫০ পয়সা আয় করা কোম্পানিটি এবার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে সাড়ে ১১ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১৫ পয়সা।

কোম্পানিটির সম্পদও খানিকটা বেড়েছে। গত ৩০ জুন শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ২০ টাকা ৯৩ পয়সার। তিন মাস পরে সেটি বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা ২৭ পয়সা।

ইউনাইটেড পাওয়ার

এই কোম্পানিটিই শেয়ারপ্রতি সর্বোচ্চ আয় করেছে। তবে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় এই আয় সামান্য কম।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫ টাকা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ৫ টাকা ৫ পয়সা আয় হয়েছিল। আয় ৫ পয়সা বা ১ শতাংশের কম কমেছে।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে ছয় বছরের সর্বোচ্চ আয় করে কোম্পানিটি। শেয়ারপ্রতি ১৮ টাকা ৮০ আয় করে ১৭ টাকা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেও দরপতন হয় কোম্পানিটির।

অর্থবছর শেষে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ৫৬ টাকা ১৮ পয়সা, যেটি তিন মাস পর বেড়ে হয়েছে ৬১ টাকা ১৭ পয়সা।

বারাকা পাওয়ার

এই কোম্পানিটির আয় বেড়েছে সামান্যই। জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৮৪ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই আয় ছিল ৮২ পয়সা।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি ২ টাকা ৯৬ পয়সা আয় করে এক টাকা করে লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছিল ২০ টাকা ৯১ পয়সা। তিন মাস পর সেই সম্পদ বেড়ে হয়েছে ২২ টাকা ২০ পয়সা।

খুলনা পাওয়ার

এই কোম্পানিটি লোকসানিতে পরিণত হয়েছে একটি বিশেষ কারণে। গত মে মাসে কোম্পানির দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এখন সহযোগী কোম্পানি ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ারের ৩৫ শতাংশের মালিকানার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

তবে এই কোম্পানির আয় প্রথম প্রান্তিকে যোগ হয়নি। আর এর প্রভাবে গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে কেপিসিএল লোকসান দিয়েছে ১০ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৯১ পয়সা।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি ৮৭ পয়সা আয় করে ১ টাকা ২৫ পয়সা নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

লোকসানে পড়া কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদের পরিমাণও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে ১০ টাকার শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ দাঁড়িয়েছে ২১ টাকা ৯৭ পয়সা। গত ৩০ জুন শেয়ার প্রতি সম্পদ ছিল ২২ টাকা ৭ পয়সার।

জ্বালানি খাতের তিন কোম্পানি

একই দিন জ্বালানি খাতেরও তিনটি কোম্পানি তাদের প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে একটির আয় বেড়েছে। একটির কমেছে। একটির লোকসান সামান্য কমেছে।

ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের

গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন শেয়ারপ্রতি আয় করতে পেরেছে ৩৩ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১২ পয়সা।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ৮১ পয়সা আয় করে ৮ শতাংশ বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা নগদ লভ্যাংশও ঘোষণা করে।

আয়ের পাশাপাশি কোম্পানিটির সম্পদও গত তিন মাসে খানিকটা বেড়েছে। ৩০ জুন অর্থবছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ১২ টাকা ১৭ পয়সার। তিন মাসে সেটি খানিকটা বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা।

আয় বৃদ্ধির বিপরীতে দুটি কোম্পানির ক্ষেত্রে দেখা গেলে উল্টো চিত্র। এর মধ্যে একটি আয় কমেছে, একটির লোকসান কমেছে।

নাভানা সিএনজি

এই কোম্পানিটি প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ৬ পয়সা আয় করতে পেরেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১১ পয়সা। অর্থাৎ আয় কমে প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে।

গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ২২ পয়সা আয় করে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ারের পাশাপাশি কেবল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা নগদ লভ্যাংশও ঘোষণা করে।

অর্থবছর শেষে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানিটির সম্পদ ছিল ৩৫ টাকা ২৮ পয়সার। তিন মাস পর সেটি সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৩৬ পয়সা।

সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল রিফাইনারি

আলোচিত এই কোম্পানিটি ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে বড় অঙ্কের লোকসান দেয়ার পরও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল।

২০১৭ সাল থেকে বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি উৎপাদন চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণার আগে শেয়ার দর বেড়ে তিন গুণ হয়ে যায়।

তবে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের হিসাব বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, উৎপাদন শুরুর প্রভাব আয়ে পড়েনি।

প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৭ পয়সা। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬৮ পয়সা।

লোকসানের কারণে কোম্পানিটির সম্পদ কমে গেছে। গত ৩০ জুন শেষে শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ ছিল ১১ টাকা ৫৫ পয়সার। তিন মাস পরে সেটি দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা।

এ বিভাগের আরো খবর