এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ৯টি শিক্ষা বোর্ডে সাড়ে তিন হাজার পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
নকল করা ও নকলে সহযোগিতার জন্য বরিশালে এক শিক্ষার্থী ও দুই কক্ষ পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়েছে। দিনাজপুরে বহিষ্কার হয়েছে এক শিক্ষার্থী।
৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রোববার পদার্থবিজ্ঞানের (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা হয়। এ বিষয়ের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী ছিল ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৩৪ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ছিল ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৪৮৬ জন। এই হিসাবে অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫৪৮ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে রোববার এসব তথ্য জানানো হয়।
জানতে চাইলে আন্তশিক্ষা বোর্ডের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, ‘প্রথম দিনের এসএসসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সার্বিক পরিসংখ্যান দেখে বলা যায়, প্রথম দিন সর্বোচ্চসংখ্যক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।’
এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে ঢাকা বোর্ডের অধীনে ৪২৩টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮০৭ জন অংশ নেয়ার কথা থাকলেও ১ লাখ ২৭ হাজার ৯২৩ পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ৮৮৪ জন পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে যায়নি।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ২০৪ পরীক্ষা কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৩৩৭ জনের মধ্যে ২৮ হাজার ১৪৩ জন উপস্থিত ছিল। ১৯৪ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের ২৬৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৭৯ হাজার ৮৮৬ জনের মধ্যে ৭৯ হাজার ৪২৩ জন উপস্থিত ছিল। ৪৬৩ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের ১৭৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ২৩ হাজার ৬১৭ জনের মধ্যে ২৩ হাজার ৪৪৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ১৭২ পরীক্ষার্থী উপস্থিত হয়নি। দুই কক্ষ পরিদর্শককে বহিষ্কার করা হয়।
সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ১৪৬টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ১৯ হাজার ৮৭৩ জনের মধ্যে ১৯ হাজার ৭২৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ১৪৮ পরীক্ষার্থী কেন্দ্রে যায়নি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের ২৭৫টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৭৭ হাজার ৯১২ জনের মধ্যে ৭৭ হাজার ৩১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ৫৯৭ জন অনুপস্থিত ছিল।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ২৬৮ পরীক্ষা কেন্দ্রে ৫৩ হাজার ৩৭৮ জনের মধ্যে ৫২ হাজার ৭৭১ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ৬০৭ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের ১৪৭টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৪০ হাজার ১৯৮ জনের মধ্যে ৩৯ হাজার ৮৮৬ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ৩১২ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের ২৯১টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ২৬ জনের মধ্যে ৩৫ হাজার ৮৫৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। ১৭১ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
এ ছাড়াও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের ২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৭১ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ২ লাখ ৫৯ হাজার ৪৭৭ জন। মোট ৯ হাজার ৮৯৪ শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
অনুপস্থিতির হার ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ । এ বোর্ডে নকল করায় ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১ লাখ ৪২ হাজার ৭২৪ শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪৬ জন। মোট অনুপস্থিত ৫ হাজার ৩৭৮ পরীক্ষার্থী।
সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর করোনা মহামারির কারণে এই পাবলিক পরীক্ষা নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেড়েছে। গতবার পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন।
মোট ২৯ হাজার ৩৫টি স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ পরীক্ষার্থীর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।