এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের কথা বলে কয়েকটি চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে। এমন অভিযোগে শনিবার দুটি চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
আটক তিনজনের মধ্যে কালিমুল্লাহ টঙ্গী সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, আল রাফি টুটুল মোহনগঞ্জ সরকারি কলেজের মানবিকের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং আব্দুল্লাহ আল মারুফ হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন।
ডিবির গুলশান বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান রোববার জানান, চক্রের সদস্যরা এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল। বাস্তবে তাদের পক্ষে প্রশ্নপত্র ফাঁস করা সম্ভব ছিল না। কিছু ছাত্র ও অভিভাবক লেখাপড়ায় মনোযোগ না দিয়ে প্রশ্নপত্র কেনার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্রাউজ করতে থাকে। প্রতারকরা মূলত তাদের টার্গেট করেই ইন্টারনেটে অফার দিত।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামের প্রতারকদের তৎপরতা বিষয়ে রোববার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত কমিশনার ডিবিপ্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সময় কিছু অসাধু চক্র টাকা হাতিয়ে নিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা করে। তারা প্রশ্ন ফাঁস করার নামে বিভিন্ন প্যাকেজ নিয়ে ফেসবুক, মেসেঞ্জারসহ ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার চালায়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ এসব প্রতারকের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে সাইবার পেট্রলিং করে।
ডিবি গুলশান বিভাগের একাধিক টিম ঢাকার উত্তরা, গাজীপুরের পূবাইল ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার তৎপরতা চালানো দুটি চক্রের তিন সদস্যকে আটক করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় তিনটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, নগদ ১২ হাজার টাকা ও ছয়টি সিম।
ডিবির প্রধান বলেন, চক্রগুলো ভুয়া পরিচয়ে মেসেঞ্জার ও ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে শতভাগ নিশ্চয়তাসহকারে এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নপত্র আগাম পাইয়ে দেয়ার বিজ্ঞাপন দিত। আর তা পেতে প্রাথমিকভাবে পাঁচ শ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে দিয়ে সদস্য হতে হতো। এরপর প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ওরা হাতিয়ে নিত সমপরিমাণ টাকা। এভাবে ওরা নগদ, বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
প্রতারক চক্রের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে ফলোয়ারের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০ জন।