বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোটের প্রচারে সরকারি শিক্ষকদের নামাচ্ছেন টুকুপুত্র

  •    
  • ১৪ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:০৩

ফেসবুকে একটি লাইভে দেখা গেছে, টুকুর ছোট ছেলে নাসিফ শামস রনি সম্প্রতি বেড়া সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষে কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে বড় ভাই রঞ্জনকে বিজয়ী করতে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে।

পাবনা বেড়া পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। প্রচারের শুরুতেই আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জন ও তার বাবা সাংসদ শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভোটারদের হুমকি দেয়ার অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বীরা।

টুকু ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগে লিখিত অভিযোগও নির্বাচন কমিশনে দেয়া হয়েছে।

সবশেষ ফেসবুকে একটি লাইভে দেখা গেছে, টুকুর ছোট ছেলে নাসিফ শামস রনি সম্প্রতি বেড়া সরকারি কলেজে অধ্যক্ষের কক্ষে কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। সেখানে বড় ভাই রঞ্জনকে বিজয়ী করতে কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ওই লাইভে দেখা গেছে, একটি কক্ষে নাসিফ রনি, বেড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক, ইছামতি কমার্শিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, মনজুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মুস্তাফিজুর রহমান, জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বলে পরিচিত আলহেরা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হাকিমুল কবিরসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক বসে কথা বলছেন।

বৈঠকের শুরুতেই অধ্যক্ষ ফজলুল হককে বলতে শোনা যায়, ‘মাননীয় সাংসদ শামসুল হক টুকু আমাদের অভিভাবক। আমরা ঘরোয়াভাবে তার সঙ্গে বসেছি। তিনি নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের তার নির্দেশের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা চার কলেজের অধ্যক্ষ বসে নির্বাচনে শিক্ষকদের নিয়ে কাজ করার কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে মাঠে নামব।’

বেড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক সেখানে বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নৌকার প্রার্থীর বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে। ঘরে বসে থাকার সময় নেই।’

তিনি সব শিক্ষকদের মাঠে নেমে পড়তে আহ্বানও জানান। নাসিফ রনি শিক্ষকদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

নাসিফ শামস রনির অনুসারী জহির রায়হান সজল পুরো বৈঠক ফেসবুকে লাইভ করেন। সেটি ফেসবুকে ভাইরাল হলে সমালোচিত হন ওই শিক্ষকরা।

স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগেও বিষয়টি জানিয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ফজলুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘শামসুল হক টুকু এমপি নিজ সন্তানকে বিজয়ী করতে এখতিয়ার বহির্ভূত ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের প্রভাব খাটিয়ে তার ছেলের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য করছেন। চাকরি বাঁচাতে ও মানসম্মানের ভয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নৌকার প্রচারে নামতে বাধ্য হচ্ছেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বেড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র আব্দুল বাতেন বলেন, ‘নির্বাচনি সভায় সংসদ সদস্যের উপস্থিতির বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সাংসদ টুকু তা করছেন। তার উপস্থিতিতে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ময়ছের, হাকিম বস, রমজান, হান্নান বিভিন্ন সমাবেশে নৌকায় ভোট না দিলে এলাকা ছাড়া করার প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছে। আমার উপর সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ জানালেও মামলা নিতে বাধা দিয়েছেন টুকু এমপি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিয়া আলম জানান, সাংসদ এলাকায় উপস্থিত থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ভোটের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।

টুকুপুত্রের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বেড়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নির্বাচনি বৈঠক নয়, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে নাসিফ শামস রনির সঙ্গে বৈঠক করেছি। নির্বাচনের বিষয়ে কোনো আলাপ হয়নি।’

ভিডিওর বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুললে তিনি জানেন না বলে ফোন রেখে দেন। বৈঠকে থাকা অন্য শিক্ষকরাও এ প্রসঙ্গে মন্তব্য এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে নাসিফ শামস রনি বলেন, সেটি জলবায়ু বিষয়ক আলোচনা সভা ছিল। এ নিয়ে কারও সঙ্গে তর্কে জড়াতে চান না।

সাংসদ শামসুল হক টুকু বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি মেনেই আমি নৌকার পক্ষে কাজ করছি এবং করবো। আমি কাউকে ভীতি প্রদর্শন বা চাপ দেইনি। মিথ্যা অপপ্রচার করে নৌকার বিজয় আটকে রাখা যাবে না।’

জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা ও বেড়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মাহবুবুর রহমান জানান, নির্বাচনি কাজে সরকারি অফিস ব্যবহার ও চাকুরীজীবীদের জড়ানোর সুযোগ নেই। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিভাগের আরো খবর