করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে নির্ধারিত সময়ের সাড়ে আট মাস পর শুরু হলো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। শুরুতেই বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষায় বসেছে শিক্ষার্থীরা।
পরীক্ষা হচ্ছে দুই শিফটে। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, রোববার সকাল ১০টায় শুরু হয় পরীক্ষা। শেষ হবে সাড়ে ১১টায়। দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা শুরু হবে দুপুর ২টায়, শেষ হবে বেলা সাড়ে ৩টায়।
দেশে দেড় বছরে এই প্রথম কোনো পাবলিক পরীক্ষা শুরু হলো। এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় সব মিলিয়ে অংশ নিচ্ছেন ২২ লাখের বেশি শিক্ষার্থী।
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাত জীবাণুমুক্ত করা এবং তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাখা হয়েছে আইসোলেশন রুমও।
কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের বাড়তি চাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এর অংশ হিসেবে পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের কর্মী ছাড়া অন্য কাউকে পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
এবারের এসএসসি পরীক্ষা হবে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। অন্যান্য আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হবে।
সাধারণত প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক (এসএসসি) পরীক্ষা শুরু হলেও এ বছর করোনার কারণে এই পাবলিক পরীক্ষা নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে নেয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।
এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। গতবারের চেয়ে এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেড়েছে। গতবার পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন।
মোট ২৯ হাজার ৩৫টি স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
৯টি সাধারণ বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে ১৭ হাজার ৬৭৬টি স্কুলের ১৮ লাখ ৯৯৮ জন শিক্ষার্থী। আর ৯ হাজার ১১০টি মাদরাসার ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় অংশ নেবে ২ হাজার ৩৪৯টি কারিগরি প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন শিক্ষার্থী।
চলতি বছর ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি।
কবে কোন পরীক্ষা
সূচি অনুযায়ী, রোববার (১৪ নভেম্বর) পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়), ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা ও হিসাববিজ্ঞান এবং ১৬ নভেম্বর রসায়ন (তত্ত্বীয়), ১৮ নভেম্বর শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া (তত্ত্বীয়), ২১ নভেম্বর ভূগোল ও পরিবেশ ও ফিন্যান্স ও ব্যাকিং পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া ২২ নভেম্বর উচ্চতর গণিত (তত্ত্বীয়) ও জীববিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) এবং ২৩ নভেম্বর পৌরনীতি ও নাগরিকতা, অর্থনীতি ও ব্যবসায় উদ্যোগ পরীক্ষা হবে।
পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা
# করোনা মহামারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।# পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কক্ষে আসন গ্রহণ করতে হবে।# পরীক্ষার সময় হবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র এবং ও এমআর শিট বিতরণ করা হবে। সকাল ১০টায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ। সকাল ১০.১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে।# দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে লিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনি শিট বিতরণ করা হবে। দুপুর ২টায় বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হবে। দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে বহুনির্বাচনি উত্তরপত্র সংগ্রহ ও সৃজনশীল প্রশ্নপত্র বিতরণ।# পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলে দেয়া হয়েছে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।