গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত সদস্যকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
নিহত আব্দুর রউফের বড় বোন মমতাজ বেগম শনিবার রাত ১১টার দিকে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা করেন। এতে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের মাগুরাকুটি গ্রামের আরিফ মিয়াকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি আছে ৬ থেকে ৭ জন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদার রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শনিবার রাতে মমতাজ বেগম হত্যা মামলা করেছেন। প্রধান আসামি আরিফকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনো সময় তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন রউফ। তিনি লক্ষ্মীপুর উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তার বাড়ি গোবিন্দপুর গ্রামে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তার প্রতিবেশী রুহুল আমিনের সঙ্গে মোটরসাইকেলে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি একটি ভাঙা ব্রিজ হেঁটে পার হওয়ার সময় এক যুবক লোহার রড দিয়ে তার মাথায় ও পিঠে কয়েকটি আঘাত করে পালিয়ে যায়।
সদর হাসপাতালে নিলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসক রউফকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের দাবি, রউফের ওপর হামলাকারী যুবকের নাম আরিফ।
মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে উত্তেজিত লোকজন আরিফের বাড়িতে আগুন দেয়।
পরদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কয়েক দফায় লক্ষ্মীপুর বাজারসহ আশপাশে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় লোকজন।
রউফের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হলে দুপুর পৌনে ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন আবারও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। গ্রামজুড়ে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
এ সময় পুলিশের উপস্থিতিতেই পরপর দুই দফা আরিফের বাড়িতে আগুন দেয়া হয়। আগুন দেয়া হয় তার স্বজনদের ঘরেও। পোড়ানো হয় পাঁচটি ঘর ও বিভিন্ন আসবাব। ভাঙচুর করা হয় স্বজনদের আরও ৭ থেকে ৮টি ঘর।