দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার পলাতক আসামি তারেক রহমান বিদেশে অবস্থান করে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘সরকার সব ধরনের চক্রান্ত মোকাবিলা করে দেশকে এমন একটি অবস্থানে নিয়ে গেছে, যাতে করে বিশ্বকে সম্মান করতে হবে। অথচ পলাতক আসামি তারেক রহমান বাংলাদেশের অগ্রগতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
শনিবার ফ্রান্সের প্যারিসে এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগদান করে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বাংলাদেশের একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
সংর্বধনা অনুষ্ঠানে ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদচিহ্ন অনুসরণ করে আমরা বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি। সুতরাং এখন থেকে কেউ আমাদের অবহেলা করতে পারবে না। বিশ্ব অবশ্যই আমাদের সম্মান করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশকে আজকের অবস্থানে নিয়ে যেতে সরকারকে বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসংযোগ, প্রাণনাশের জন্য আমার ওপর হামলার মতো অনেক বাধা-বিপত্তি ও ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি হতে হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২১ বছর পর দায়িত্ব গ্রহণ করে আমরা দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। অথচ অতীতে বিএনপি-জামায়াত চক্র দুর্নীতি ও ঋলখেলাপির সংস্কৃতি চালু করে নিজেদের ভাগ্য তৈরি করেছে।’
সরকার বাংলাদেশে একশটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানান। প্রবাসীরা এসব অঞ্চলে বিনিয়োগ করলে তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে প্রবাসী বাংলাদেশিরা জনগণের পাশে ছিল।
প্রধানমন্ত্রী সাফল্যের সঙ্গে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি জীবন ও জীবিকা রক্ষায় তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ, চাকরিজীবী, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সবাইকে বিনা মূল্যে টিকা দেয়া হচ্ছে, যা অনেক উন্নত দেশও করতে পারেনি।’
দেশের বৃহত্তম পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিরুদ্ধে চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক ঘুষের অভিযোগ আনে। কিন্তু কানাডার ফেডারেল কোর্টে তা ভিত্তিহীন প্রমাণ হয়।’ তিনি বলেন, ‘দেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের ফলে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে, মর্যাদা বেড়েছে।’
শেখ হাসিনা সামরিক একনায়ক জিয়াউর রহমানসহ পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলোর দুঃশাসনের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে সমাজে একটি অভিজাত শ্রেণি সৃষ্টি করে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বিচারের নামে শত শত সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে। নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা তাদের লাশও পায়নি। জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এতিমদের অর্থ আত্মসাতের দায়ে আদালতে দণ্ডিত। আর তাদের পুত্র তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দণ্ডিত।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সরকার একজন সামরিক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে। তার অপরাধ ছিল সে একটি অবিস্ফোরিত গ্রেনেড আলামত হিসেবে রেখে দিতে চেয়েছিল। আর যে পুলিশ অফিসার ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরেছিল তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।’