ভারতের মহারাষ্ট্রে মুম্বাই শহর থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে গড়চিরৌলিতে বন্দুকযুদ্ধে ২৬ জন মাওবাদী যোদ্ধা নিহত হওয়ার দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ। এ ঘটনায় অন্তত চারজন পুলিশও আহত হয়েছেন।
শনিবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গড়চিরৌলির মারদিনতলা বনাঞ্চলে শনিবার সকাল থেকে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে পুলিশের কমান্ডো বাহিনী সি-৬০। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ওই মাওবাদী যোদ্ধাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
গড়চিরৌলির পুলিশ সুপার অঙ্কিত গোয়েল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ২৬ মাওবাদীর মরদেহ আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। এখনও তল্লাসি অভিযান চলছে।’
নিহত মাওবাদীদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় কেউ আছেন কি না সেটি এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক মাওবাদী নেতার উপস্থিতির খবর পাওয়ার পরেই অভিযান শুরু করে সি-৬০। সংঘর্ষের জায়গাটি মাওবাদী অধ্যুষিত ছত্তিশগড়ের রাজ্যের সীমান্তবর্তী।
ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত গ্রাম নকশালবাড়ী থেকে ভারতে সশস্ত্র মাওবাদী আন্দোলন শুরু হয়। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সেই আন্দোলন দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতের ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা, বিহার, ছত্তিশগড় এবং অন্ধ্র প্রদেশে মাওবাদীরা শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছেন। বিহার এবং উত্তর প্রদেশেও তাদের উপস্থিতি রয়েছে। দেশটির মধ্য এবং পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা নিয়ে মাওবাদীরা একটি ‘লাল করিডর’ প্রতিষ্ঠা করেছেন।
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মাওবাদী আন্দোলনকে ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ‘সবচেয়ে বড় হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
তবে মাওবাদীদের দাবি, তারা ভারতের আদিবাসী জনগোষ্ঠী আর দরিদ্র গ্রামবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছেন। একই সঙ্গে ‘লাল করিডর’ নামে পরিচিত অঞ্চলে বনাঞ্চল ধ্বংস করে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর খনিজ সম্পদ উত্তোলনের বিরুদ্ধেও তাদের সক্রিয় প্রতিরোধ রয়েছে।