নারায়ণগঞ্জে বৃহস্পতিবার ইউপি নির্বাচনে কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠির আঘাত ছাত্রলীগ নেতার গায়ে লেগেছে উল্লেখ করে ‘ঘটনা যেখানে জানানোর সেখানে জানিয়েছি’ বলে মন্তব্য করেছেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় এই এমপি শনিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের রাইফেল ক্লাবে ইউপি নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই মন্তব্য করেন। মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা মারধরের শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলে নির্বাচনের দিনো তিনি র্যাবের এক কর্মকর্তার ওপর চটে যান তিনি।
শামীম ওসমান বলেন, ‘আমি এনায়েতনগর ইউনিয়নের ভোটার। নির্বাচনের দিন ভোট দিতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ শুনলাম, একটি বিশেষ বাহিনী র্যাব মাসদাইর প্রাথমিক স্কুলে গেছে। সেখানে কোনো গণ্ডগোল নেই, নির্বাচনও শেষ পর্যায়ে। সেখানে ভুল বোঝাবুঝি বা যে কোনও কারণেই হোক সাধারণ একটা সাজানো ঘটনা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াদের গায়ে আঘাত হয়ে গেছে। আমরা সেটা যেখানে জানানো দরকার জানিয়েছি এবং জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটি খুবই সুন্দর নির্বাচন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন যখন শেষের দিকে তখনই একটি কষ্টের দাগ লেগে গেছে। ওইদিন একটি সাজানো ঘটনা ছিল যা আরও বড় হতে পারতো।'
তিনি বলেন, 'তৃতীয় একটি পক্ষ চেয়েছিল লাশ ফেলে বিশৃঙ্খলা করবে। আমি বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছি এবং সেটা প্রতিহত করা হয়েছে।’
মতবিনিময় সভায় সদর ও বন্দর উপজেলার ইউনিয়নগুলোর সদ্যনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুরে এনায়েতনগর ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে র্যাব। এ সময় মহানগর ছাত্রলীগের নেতারা মারধরের শিকার হয়েছেন এমন অভিযোগে র্যাবের এক কর্মকর্তার ওপর চটে যান সাংসদ শামীম ওসমান।
ছাত্রলীগ নেতারা আহাজারি করে এমপির কাছে র্যাবের বিরুদ্ধে মারধরের নালিশ দিচ্ছেন এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে তাদের মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে র্যাব।
বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ওই কেন্দ্রে যান শামীম ওসমান। ওই সময় তার কাছে নালিশ করেন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুলসহ অন্যরা।
রাকিবুল বলেন, ‘আমাদের কুত্তার (কুকুরের) মতো পিটিয়েছে।’
একই কথা বলেন রিয়াদও।
এ সময় কেন্দ্রের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন র্যাব কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার এ কে এম মনিরুল আলম। তাকে শামীম ওসমান জিজ্ঞাসা করেন, ‘ওদের মারছেন কেন?’
জবাবে র্যাব-১১ এর এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওদেরকে মারি নাই স্যার। দেখেন, ওরা এসব জিনিসপত্র নিয়ে (ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা) আসছে। ওখানে ককটেল আছে। তারা এখানেই ছিল। আপনি সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন।’
জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন নারায়ণগঞ্জ আপনি সামাল দেন। দেখি আপনি পারেন কি না আর আমি পারি কি না। আপনি ছাত্রলীগের জয়েন্ট সেক্রেটারিকে চোরের মতো মারবেন?’
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘চোরের মতো পিটানো হয় নাই স্যার। তাদের প্রতিহত করা হয়েছে এগুলো নিয়ে আসায়।’
এ সময় সাংবাদিকেরা শামীম ওসমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কিছু না বলে কেন্দ্র থেকে চলে যান।