ইউরোপের কয়েকটি দেশে নতুন করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার খবরের মধ্যেই দেশজুড়ে আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে নেদারল্যান্ডস। শনিবার থেকে তিন সপ্তাহের জন্য জারি করা এই লকডাউনে রাত ৮টার মধ্যে বার, রেস্তোরাঁ ও সুপার মার্কেট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টার পরে বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে জরুরি পণ্য ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দোকান।
এ ঘোষণার পর দ্য হেগ শহরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেন লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা।
শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার লকডাউন ঘোষণার সময় নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সম্ভব হলে ঘর থেকে অফিস করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
নেদারল্যান্ডসের জনসংখ্যার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষকে করোনাভাইরাসের পূর্ণ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এখনও যারা টিকা পাননি তাদের খুব জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রুট।
বৃহস্পতিবার নেদারল্যান্ডসের পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউট জানিয়েছিল, ২৪ ঘণ্টায় ১৬ হাজার ৩৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ১৮ হাজার ৬০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে লকডাউন তুলে নিয়েছিল নেদারল্যান্ডস।
শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক সপ্তাহে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক সংক্রমণের গড়ের অর্ধেকের বেশি ধরা পড়েছে ইউরোপে। এ সময়ে মৃতের হারও ইউরোপে বেশি।
৯ নভেম্বর প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুধু রাশিয়াসহ ইউরোপেই করোনা সংক্রমণ নতুন করে বেড়েছে। অন্যান্য দেশে এই হার যখন স্থিতিশীল বা কমার দিকে, তখন ইউরোপে ওই সপ্তাহে সংক্রমণ বেড়েছে ৭ শতাংশ। এ ছাড়া এ সময়ে মৃতের হারও ১০ শতাংশ বেড়েছে।
শুক্রবার অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর আলেক্সান্দার স্ল্যাচেনবার্গ জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ধরা পড়া দুটি অঞ্চলে টিকা না নেয়াদের জন্য লকডাউন আরোপ করা হবে। পরে এই লকডাউন দেশজুড়ে দেয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ইতোমধ্যে নাগরিকদের জনসমাগম এড়িয়ে চলার অনুরোধ করেছে জার্মানির সরকার। একই সঙ্গে শনিবার থেকে দেশটিতে বিনা মূল্যে করোনা পরীক্ষার উদ্যোগও নেয়া হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে সবচেয়ে কম টিকা পেয়েছেন লাটভিয়ার নাগরিকরা। করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকেই চার সপ্তাহের লকডাউন জারি করেছে দেশটি। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই লকডাউন আরও বাড়তে পারে।
এ ছাড়া করোনা ঠেকাতে নতুন করে বিধিনিষেধ কঠোর করেছে চেক রিপাবলিক, স্লোভাকিয়া ও রাশিয়াও।