বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফতুল্লায় বিস্ফোরণ: মা হারানো পূর্ণিমার পাশে জেলা প্রশাসন

  •    
  • ১৩ নভেম্বর, ২০২১ ১৮:১৮

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা পূর্ণিমার মাকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। তবে অসহায় পরিবারটির পাশে থাকতে চাই। পূর্ণিমার গ্রামের বাড়ি যেহেতু সিলেটের ছাতকে, সে জন্য ওই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পূর্ণিমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।’

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে চেয়ালচাপায় মা হারানো পূর্ণিমা রানীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর হয়ে ফতুল্লা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সরকার ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা উম্মে তানিয়া শনিবার দুপুরে পূর্ণিমার বাড়ি গিয়ে তার খোঁজখবর নেন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

তারা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূর্ণিমার দাদির হাতে ২৫ হাজার টাকা তুলে দেন।

গত শুক্রবার সকালে পূর্ণিমাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য পূর্ব শিয়াচর এলাকায় একটি বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা পোশাকশ্রমিক মঙ্গলী রানী। সেই বাড়ির নিচতলায় হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়, দেয়াল ধসে পড়ে তাদের ওপর। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে মৃত্যু হয় মঙ্গলীর।

এ ঘটনায় মৃত্যু হয় ওই ভবন লাগোয়া একটি ঘরে ভাড়া থাকা আরেক পোশাকশ্রমিক মায়া রানীর।

মঙ্গলীর গ্রামের বাড়ি সিলেটের ছাতকে। অসুস্থ স্বামীর মৃত্যুর পর জীবিকার খোঁজে ১১ বছরের বড় মেয়ে পূর্ণিমাকে নিয়ে এক বছর আগে ফতুল্লায় আসেন তিনি। কাজ নেন পোশাক কারখানায়। দুই মাস আগে বাড়ি থেকে তার ছোট মেয়ে ৬ বছরের স্বর্ণিমাকে নিয়ে শাশুড়িও তাদের সঙ্গে থাকতে চলে আসেন।

চারজনের সংসার সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন মঙ্গলী। সংসারের খরচ জোগাতে স্কুল ছেড়ে মায়ের সঙ্গে পূর্ণিমাও পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেয়।

পূর্ণিমা জানায়, কিছুদিন আগে তার জন্ডিস হয়েছিল। প্রতিবেশীদের পরামর্শে এক কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিল। সেই কবিরাজের কাছে যেতেই শুক্রবার সকালে মায়ের সঙ্গে বের হয় সে। পথে মাকে হারিয়ে ফেলে চিরতরে। নিজেও আহত হয়।

পূর্ণিমাকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা। সেই সংবাদ নজরে আসে জেলা প্রশাসনের। এরপর তারা পূর্ণিমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

আবু বক্কর সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা প্রসাশন পূর্ণিমার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে। পাশাপাশি তাদের পরিবারের জন্য বাড়ির ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছে। তাৎক্ষণিক সাহায্য হিসেবে ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।’

ডিসি মোস্তাইন বিল্লাহ পূর্ণিমাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় নিউজবাংলার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা পূর্ণিমার মাকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। তবে অসহায় পরিবারটির পাশে থাকতে চাই। পূর্ণিমার গ্রামের বাড়ি যেহেতু সিলেটের ছাতকে, সে জন্য ওই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়েছে যেন গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে পূর্ণিমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়।’

ফতুল্লার বিস্ফোরণের ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা খাতুনকে প্রধান করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

তবে এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রকিবুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসন যে তদন্ত কমিটি করেছে, সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ কারণে এখনও মামলা হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর