ফিলিপাইনের নাগরিক জিন ক্যাটামিন পেট্রিয়াকা। ভালোবেসে বিয়ে করেন বাংলাদেশের জুলহাস উদ্দিনকে। স্বামীর সঙ্গে চলে আসেন এ দেশে।
শুধু পরিবার নয়ই, আশপাশের মানুষকেও আপন করে নিয়েছেন তিনি। পেট্রিয়াকা জয়ী হয়েছেন এ দেশের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার রাধাকানাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১, ২ ও ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবারের নির্বাচনে তার সঙ্গে সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তিন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মাইক প্রতীক নিয়ে ৪ হাজার ৪৯৬ ভোট পেয়ে জয়ী হন পেট্রিয়াকা। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী পান ১ হাজার ৮৩৭ ভোট।
পেট্রিয়াকা নিউজবাংলাকে জানান, ২০০৮ সালে ফিলিপাইনের মিন্দানাও স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ফিশারিজ বিভাগে গ্র্যাজুয়েশন করেন। এরপর সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানিতে চাকরিতে যোগ দেন। সেখানেই চাকরি করতেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ার জুলহাস।
সিঙ্গাপুরে কোম্পানিতে কাজ করার সময় দুজনের পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর দুয়েক পর নিজ নিজ দেশে ফেরেন তারা, তবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ থাকে।
একপর্যায় দুজন সিদ্ধান্ত নেন বিয়ের। ২০১০ সালের শেষের দিকে জুলহাস পাড়ি জমান ফিলিপাইনে। সেখানে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পেট্রিয়াকা স্বামীর হাত ধরে চলে আসেন ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায়।
পেট্রিয়াকা বলেন, ‘আমি বাংলা বলতে পারতাম না। আর এখানকার গ্রামের মানুষ ইংরেজি বোঝে না। আস্তে আস্তে আমি বাংলা শেখার চেষ্টা করি। এখন সবার কথাই মোটামুটি বুঝি। কিছু কিছু বলতেও পারি।
‘আমি নির্বাচনে দাঁড়াতে চাইনি; ইচ্ছাও ছিল না, কিন্তু এলাকার মানুষ জোর করে বলেছেন নির্বাচন করতে। তারা আমাকে খুব ভালোবাসেন। তাই তাদের কথা রাখতেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছি।’
জুলহাস বলেন, ‘আমাদের ১০ বছরের সংসারে ৯ বছর বয়সী জাহিদুল ইসলাম জিহাদ ও ৭ বছরের ফারিয়া আকতার শিউনা নামের দুই সন্তান রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘নিজ দেশ, আত্মীয়স্বজন সব ছেড়ে পেট্রিয়াকা নিজের নাম বদলে হয়েছে জেসমিন আক্তার। সে রাজনীতি বোঝে না, তবুও এলাকাবাসীর ইচ্ছায় নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেছে। সে নিশ্চয়ই সবার সুখে-দুঃখে সব সময় পাশে থাকবে।’