নীলফামারী জেলার এগারটি ইউনিয়নের ভোটে মাত্র দুটিতে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া একটিতে বিএনপি ও একটিতে জয় পেয়েছেন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী। বাকি ৭টিতেই জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এই ফল বিপর্যয়ে প্রার্থী বাছাইকে দুষছে বিভিন্ন মহল।
বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে গোড়গ্রাম ইউনিয়নে মাহবুব জর্জ ও সংগলশী ইউনিয়নে মোস্তাফিজুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী হন।
এ ছাড়া সোনারায় ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থিত নুরুল ইসলাম শাহ ও চাপড়া সরমজানী ইউনিয়নে জামায়াত সমর্থিত জাহাঙ্গীর আলম লালন ফকির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিতরা হলেন- লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে আমিনুর রহমান, পলাশবাড়িতে ইব্রাহিম তালুকদার, কচুকাটায় আব্দুর রউফ, রামনগরে ওবায়দুল ইসলাম, পঞ্চপুকুরে ওয়াহেদুল ইসলাম, চওড়া বড়গাছায় আবুল খায়ের বিটু ও চড়াইখোলায় মাসুম রেজা।
বৃহস্পতিবার রাতে ইউপি নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই সমালোচনায় সরব হয়ে ওঠে। সমালোচনার মূল বক্তব্য, নৌকার প্রার্থী মনোনয়ন সঠিক না হওয়াতেই এমন ভরাডুবি হয়েছে।
নীলফামারী শহরের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা হাসান আলী বলেন, ‘নৌকা হারেনি। হেরেছেন মাঝিরা। কারণ তারা যোগ্য ছিলেন না। নৌকার মাঝি হওয়ার মতো দক্ষতা নেই তাদের। প্রার্থী বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’
রাকিবুর রহমান অন্তর নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে লিখেন, ‘জনপ্রিয়তা না দেখে মনোনয়ন দিলে এরকমই হবে। ভবিষ্যতে এ ব্যাপারে সতর্ক থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
শাহরিয়ার হাসান সুজা নামে এক ব্যক্তি লিখেন, ‘দলীয় প্রার্থী হওয়ার পরও বিদ্রোহীদের দমানো যায়নি। এক্ষেত্রে তৃণমূলের স্থানীয় এই নির্বাচনে প্রতীক দিয়ে নির্বাচন না করাই ভালো।’
নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করে হেরে যাওয়া সোনারায় ইউনিয়নের প্রার্থী অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ বলেন, ‘দলের লোকজন আমার সঙ্গে বেঈমানি করেছে। তারা উপরে উপরে আমার সঙ্গে থাকলেও ভেতরে ভেতরে অন্যের হয়ে কাজ করেছে। এই ইউনিয়নে জিতেছে বিএনপি। সে আওয়ামী লীগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান মান্নুর ভাই। এখানে মান্নু লীগ আছে, আওয়ামী লীগ নেই।’
দলীয় প্রার্থীদের এমন বিপর্যয়ের বিষয়ে জানতে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুজার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।