বিশ্ব মানবতার কল্যাণে শক্তিশালী অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সংস্থাটির সদরদপ্তরে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
ইউনেস্কো মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজুলের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব এখন মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারের পথে এগিয়ে চলেছে। বিশ্ব নেতাদের অনুরোধ করব- আসুন, এই মুহূর্তকে কাজে লাগাই; বিশ্ব মানবতার কল্যাণে শক্তিশালী অংশীদারত্ব গড়ে তুলি।’
জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনেস্কোর অর্জন উদযাপনে ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী একটি অন্ন্য মুহূর্ত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ ছাড়াও শতবর্ষ পূর্ণ হওয়ার পথে পরবর্তী ২৫ বছরে সংস্থার কার্যক্রমগুলোকে গভীর থেকে দেখা এবং পুনর্বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ।’
মহামারি প্রাণ যেমন কেড়ে নিয়েছে, তেমনি জীবনকেও বদলে দিয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদেরকে উদ্ভাবনী কাজ ও গতির মাধ্যমে টিকে থাকা শিখিয়েছে।’
সংকট কাটিয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে চারটি প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রথমত, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করেছে। ডিজিটাল সরঞ্জাম ও সেবা, ইন্টারনেট সুবিধা, ডিজিটাল বিষয়বস্তু এবং শিক্ষকদের সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে একটি বৈশ্বিক পরিকল্পনা প্রয়োজন।
দ্বিতীয়ত, প্রযুক্তি সহায়ক অর্থবহ শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারদের অবশ্যই এক হতে হবে।
তৃতীয়ত, কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনকে অবশ্যই ‘বৈশ্বিক জনপণ্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্টদের জন্য।
চতুর্থত, জনগণের কল্যাণে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার সুবিধাকে কাজে লাগাতে হবে।
বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে ইউনেস্কোর ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এই সংস্থাটিকে বিশ্ব শান্তি এবং সম্মিলিত সমৃদ্ধি অর্জনে সবচেয়ে কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনা করি।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত শান্তিকেন্দ্রিক বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সব সময় বিশ্ব শান্তি উদ্যোগের অগ্রভাগে থাকে।’
শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধি অর্জনে আমরা শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং যোগাযোগকে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছি। উপবৃত্তি, জেন্ডার-সংবেদনশীল পদ্ধতি, স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম, আইসিটি শিক্ষাসহ শিক্ষার সম্প্রসারণে আমরা প্রচুর বিনিয়োগ করছি।’