বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কারিগরদের বিচারে কমিশন গঠনের দাবি

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২১ ১৯:১৫

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও তার পরবর্তী ঘটনায় যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার কুশীলব যারা, পেছনের নেপথ্যের কারিগর ছিল যারা, তাদের বিচার হয়নি। এই কুশীলবদের যতক্ষণ না বিচারের আওতায় আনা যাবে ততক্ষণ বিচার শেষ হয়েছে, তা আমরা বলতে পারব না। তাই এখন সময় হয়েছে তাদের চিহ্নিত করার।’

বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যর কুশীলবদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে কমিশন গঠনের দাবি করেছেন বিশিষ্টজনরা। তারা বলছেন, এই কাজটা করা না হলে নির্মম এই হত্যাযজ্ঞের বিচার পুরোপুরি শেষ হয়েছে, এমনটা বলার সুযোগ নেই।

বক্তারা বলেন, নেপথ্যের কুশীলবদের মধ্যে কেউ যদি মারাও যান, তাহলেও তাদের বিচার করতে হবে। তাহলে ইতিহাসে তারা অন্তত চিহ্নিত হয়ে থাকবেন।

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রগতিশীল সাংবাদিক মঞ্চ আয়োজিত ‘ঘৃণ্য আইন ইনডেমনিটি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি জানান।

আলোচক সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন অনেক হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটেছে। পরে সেগুলোর বিচার হয়েছে। কোনো সরকারই সেইসব বিচার বাধাগ্রস্ত করেনি।’

তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও তার পরবর্তী ঘটনায় যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল তাদের বিচার হয়েছে। কিন্তু এই ঘটনার কুশীলব যারা, পেছনের নেপথ্যের কারিগর ছিল যারা, তাদের বিচার হয়নি। এই কুশীলবদের যতক্ষণ না বিচারের আওতায় আনা যাবে ততক্ষণ বিচার শেষ হয়েছে, তা আমরা বলতে পারব না। তাই এখন সময় হয়েছে তাদের চিহ্নিত করার।’

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘যেকোনো ঘটনায় দায় মুক্তি দিতে পারে আদালত। কিন্তু অধ্যাদেশ জারি করে দায় মুক্তি দেয়ার ঘটনা পৃথিবীর কোথাও আছে কি না আমার জানা নেই। সেই ঘটনা ঘটেছে এ দুর্ভাগা বাংলাদেশে।’

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর খুনিদের বাঁচাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এর মাধ্যমে তাদেরকে দায়মুক্তি দেয়া হয়। পরে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালে এই অধ্যাদেশকে সংবিধানের অংশ করা হয়।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১২ নভেম্বর আজকের দিনে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বাতিল করে জাতীয় সংসদ। এরপর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সাবেক দুই সামরিক শাসক আমাদের জীবনে পদে পদে অনেকগুলো মাইন পুঁতে রেখে গেছে। আমাদেরকে, সরকারকে এসব মাইন দেখে সতর্কতার সঙ্গে চলতে হয়।

‘সামরিক শাসক আমাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে পুনরায় প্রবর্তন করে জাতি হিসেবে আমাদের যে মূলনীতি অসাম্প্রদায়িকতা সেখানে পেরেক ঠুকেছে।’

মন্ত্রী ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘তাদেরকে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি ফিরে এসে মৃত্যু নিশ্চিত করতে পায়ের নিচে পিষ্ট করা হয়েছে। এই ধরনের অসভ্য কোনো আচরণ পৃথিবীর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুকে গুলি করেছে, শেখ রাসেলকে হত্যা করেছে, জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের শাস্তি হয়েছে। কিন্তু হত্যার পেছনে যারা ছিল, এ হত্যাযজ্ঞের ষড়যন্ত্রকারী ছিল, যারা এত সুবিধা ভোগ করেছে, তারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে এর নেপথ্যের কারিগরদের বিচার করতে হবে।’

সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘কেউ মারা গেছে না বেঁচে আছে সেটা বিচার বিবেচনার বিষয় না। বঙ্গবন্ধু হত্যা ও তার পরবর্তী ঘটনার কুশীলবদের চিহ্নিত করতে অবশ্যই একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের সময় যারা সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, তাদের বক্তব্য থেকেই নেপথ্য কুশীলবদের চিহ্নিত করা যায়।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘এই ধরনের আইন পৃথিবীর কোথাও হতে পারে, সেটা কোনো সভ্য সমাজ কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয়েছে।

‘হিমালয়সম ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক আহমেদ অধ্যাদেশ জারি করে খুনিদের বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সামরিক শাসক মেজর জিয়া সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনে পরিণত করে খুনিদের রক্ষা করেন।’

এ বিভাগের আরো খবর