দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দিন ছয়জনের মৃত্যু ও অনেকের আহত হওয়ার ঘটনাকে ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ বললেও নির্বাচনকে স্বতঃস্ফূর্ত এবং উৎসবমুখর বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সংঘর্ষ, সংঘাত, প্রাণহানির মধ্য দিয়ে তৃণমূলের ভোটের পরদিন শুক্রবার রাজধানীর সরকারি বাসভবনে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করলেও দলটির স্থানীয় বহু নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়েছেন। তবে নৌকা মার্কার প্রার্থীদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
কাদের বলেন, ‘৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিতে স্বতঃস্ফূর্ত এবং উৎসবমুখর পরিবেশে গতকাল (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, অনেকে আহত হয়েছে। এ হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচনকে ঘিরে যে উৎসবমুখরতা তৈরি হয়েছে, তা ধরে রাখতে সবাইকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী ধাপের নির্বাচনে যাতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থানেরও সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ নেতা। বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলে বলে আরও বেশি ভোটে জয়ী হতে পারত, আর হারলে বলে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়।’
চূড়ান্ত বিচারে এসব ‘অপপ্রচার’ বিএনপির বিরুদ্ধেই যাচ্ছে বলেও মনে করেন কাদের। বলেন, ‘এসব সত্য বিএনপি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবে, ততই তাদের জন্য মঙ্গল।’
রাজনীতিবিদ ও আমলাদের ‘সীমারেখা’ মেনে চলা উচিত
রাজনীতিবিদ কিংবা আমলা কারও ‘সীমারেখা অতিক্রম’ করে বক্তব্য রাখা শোভন নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তিনি রাজনীতি কিংবা প্রশাসনের যে-ই হোন, দায়িত্বহীন বক্তব্য সমীচীন নয়। দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে লক্ষ করা যাচ্ছে, কিছু দায়িত্বশীল রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি কর্মকর্তা দায়িত্বহীন এবং কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য রেখে চলেন।
‘কোনো কোনো রাজনীতিবিদ, জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ সভা-সমিতি-সেমিনারে তাদের দায়িত্বের সীমারেখা অতিক্রম করে বক্তব্য রাখছেন, মন্তব্য করছেন, যা মোটেই শোভন নয়।’
কাদের বলেন, ‘রাজনীতিবিদ কিংবা সরকারি কর্মকর্তা সবারই একটি সুনির্দিষ্ট সীমারেখা আছে, আচরণবিধি আছে, সবার এ সীমারেখা মেনে চলা অতি আবশ্যক।
‘আমাদের কারও কারও অতিউৎসাহী এবং বাড়তি কথা বা বক্তব্যে জনমনে ভুল মেসেজ যেতে পারে, যা দেশের জন্য মোটেও শুভ নয়।’