রেইনট্রি হোটেলে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে করা মামলায় সবাইকে খালাস দেয়ায় সমালোচনা করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার মতে, আসামিদের অনেক টাকা, তারা অনেক ক্ষমতাবান। এই বিষয়গুলোর কারণে এমন রায় হয়েছে।
এই রায়ে ‘সমগ্র নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে’ বলেও মনে করেন তিনি।
রায়ের পরদিন শুক্রবার দুপুরে রাজধানীতে এক আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন ফখরুল।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘কালকে (বৃহস্পতিবার) একটা মামলার রায় হয়েছে। রেইনট্রি হোটেল সেখানে দুজন শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট তারা রেইপড হয়েছিল, সেটা মামলা হয়েছে। মামলাতে যেটা দেখা যাচ্ছে, আমরা যেটুকু দেখছি পত্রিকাতে.. ঘটনা ঘটেছে স্বীকার করা হচ্ছে, আদালতেও স্বীকার করছে। কিন্তু রায় হচ্ছে কী? বেকসুর খালাস।
‘কেন? কারণটা কী? কারণটা হচ্ছে যে, যারা যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদের একুইজড করা হয়েছে, দে আর সো পাওয়ারফুল। তাদের এত টাকা! জুয়েলারি, এমপি.. এই সমস্ত।’
রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: নিউজবাংলা
ফখরুল বলেন, ‘যার ফলে কী হয়েছে? আজকে সমস্ত নারী জাতিকে অপমান করে এদের খালাস দেয়া হয়েছে। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি, হতাশ হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি। এ ধরনের রায় আমরা মেনে নিতে পারি না।'
বৃহস্পতিবার ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বনানীর রেইনট্রি হোটেলে চার বছর আগে দুই তরুণীকে ধর্ষণের আলোচিত মামলার রায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির সবাইকে খালাস দেয়। ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহার ধর্ষণের অভিযোগ এলে ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নিতে বলেছেন বলেও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে।
২০১৭ সালের ৬ মে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণী বনানী থানায় গিয়ে মামলাটি করেন। তিনি অভিযোগ আনেন, এক মাসের বেশি সময় আগে ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের এক অনুষ্ঠানে ডেকে নিয়ে তাকে এবং আরেক তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়।
মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আপন জয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ। তার দুই বন্ধু ও দেহরক্ষী এবং গাড়িচালককেও আসামি করা হয়।
বিচারব্যবস্থা দলীয়করণের শিকার মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এস কে সিনহাকে (সাবেক প্রধান বিচারপতি) বন্দুক দেখিয়ে দেশ থেকে বের করে দিলেন। কী কারণে? উনি একটা রায় দিয়েছিলেন বিচারক নিয়োগ করার যে ব্যবস্থা ছিল সুপ্রিম জুডিশিয়াল কমিশন গঠন, বিচারকদের অভিশংসনের ব্যাপারে।
‘সেটা সরকার মেনে নিতে পারেনি। তারপর কী হলো? তাকে একেবারে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ থেকে বের করে দেয়া হলো… আমরা তো দেখেছি এগুলো, নামও জানি আমরা। তার মধ্যে একজন চলে গেলেন পৃথিবী ছেড়ে, ল সেক্রেটারিও ছিলেন সেটার মধ্যে।'
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার একাংশের উদ্যোগে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
জাপার সভাপতি খন্দকার লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম শাহাদাতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিএনপির আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, ইসলামিক পার্টি আবুল কাশেম, জাগপার আওলাদ হোসেন শিল্পীও বক্তব্য রাখেন।