রাজবাড়ী সদরের বানীবহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ মিয়া রাজনৈতিক কোন্দলে নিহত হয়েছেন বলে নেতাদের দাবি।
তিনি চতুর্থ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বৃহস্পতিবার বিকেলে দলীয় প্রতীক নৌকা পেয়েছিলেন।
গতকাল রাত ১২টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন লতিফ মিয়া। তিনি বানীবহ ইউনিয়নে টানা ৯ বছর চেয়ারম্যান ছিলেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রমজান আলী খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ইউনিয়নে বিএনপির সঙ্গে না হয়ে আমাদের দলীয় কোন্দল বেশি। দলীয় পদ-পদবি পেলে ব্যবসা করতে পারব, লাইসেন্স নিতে পারব এ রকম উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছেলেপেলে ছিল।
‘আমি মনে করি এই ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপে তারা জড়িত না।
তিনি আরও বলেন, ‘লতিফকে গতকাল দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল। লতিফকে সরিয়ে যারা চেয়ারম্যান হতে চান এই হত্যার পেছনে তারাই জড়িত বলে আমার মনে হয়।’
জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও বর্তমান বানীবহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বাচ্চু বলেন, ‘লতিফ আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী। লোক হিসেবে তিনি সবার কাছে ভালো মানুষ। তার ব্যক্তিগত কোনো শত্রু ছিল না। এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
‘গতকাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়। পাঁচজন প্রার্থী ছিলেন। এতে তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লতিফ মিয়া ৭০টি ভোটের মাধ্যমে ৬০টি ভোট পেয়ে প্রথম হন। দ্বিতীয় হন কাইয়ুম মিয়া, তৃতীয় মোহাম্মদ আলী চৌধুরি। আমরা এই তিনজনের নাম উপজেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠাই।
আর বাকি দুজন ছিলেন স্বপন খান ও হাফিজ। তারা দুজনই কোনো ভোট পাননি।
নিহত লতিফ মিয়ার সঙ্গে গতকাল বিকেল থেকে ছিলেন স্থানীয় মেহেদি হাসান। তিনি জানান, ‘আমি বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে তার সঙ্গে ছিলাম। সারা দিন শেষে রাতে উনি বাড়ির সামনে আমাকে নামিয়ে দিয়ে যান। আমি ঘরে ঢুকতেই কিছুক্ষণ পর গুলির আওয়াজ পাই।’
‘পরে চিল্লাচিল্লি শুনে আমি গিয়ে দেখি লতিফ ভাইয়ের গুলি লাগছে। আমরা তাকে একটি নছিমনে করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠাই।’
মেহেদি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়। মানিকগঞ্জ মুন্নু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ডাক্তারের বরাত দিয়ে মেহেদি জানান, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক বলেছেন তার শরীরে ৫টি গুলি ঢুকেছে।