বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে হলে এখনও চোখে পানি আসে’

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২১ ১২:৪২

ভোলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন টুলু বলেন, ‘বিকেলে তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জেল মিয়ার বাসায় আমাদের দাওয়াত ছিল। দাওয়াতে না গিয়ে আমরা তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ভোলায় ফিরে আসি। সেদিন রাতে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তজুমদ্দিনের ৫০ হাজার মানুষ মারা যায়। ওখানে থেকে গেলে আমরাও হয়তো মারা যেতাম।’

গোর্কি ঘূর্ণিঝড়ের পর পেরিয়ে গেছে ৫১ বছর। এখনও ভোলার মানুষ সেই সময়ের কথা মনে করে শিউরে ওঠেন।

১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় গোর্কি। এতে প্রাণ হারায় ১০ লাখের বেশি মানুষ।

তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ভোলা। শুধু ভোলা জেলাতেই ৩ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। তার মধ্যে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরার ছিল ২৬ হাজার মানুষ। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এই জেলার অধিকাংশ এলাকা। পরে ঘূর্ণিঝড়টি ভোলা সাইক্লোন নামেও পরিচিতি পায়।

ঘূর্ণিঝড়ে ভোলার এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা পাঁচ দিন পর জানতে পারে রাজধানীর মানুষ।

সেই দিনের কথা মনে করে ভোলা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মমিন টুলু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তখন আমি এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। ওই দিন সকালে তজুমদ্দিন উপজেলার মঙ্গল শিকদারের সঙ্গে তোফায়েল আহমেদের নির্বাচনি সভা ছিল। আমরা তোফায়েল আহমেদকে সেই সভা স্থগিত করার কথা বললেও তিনি তা শোনেননি। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই আমরা সভায় যাই।

‘বিকেলে তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জেল মিয়ার বাসায় আমাদের দাওয়াত ছিল। দাওয়াতে না গিয়ে আমরা তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ভোলায় ফিরে আসি। সেদিন রাতে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে তজুমদ্দিনের ৫০ হাজার মানুষ মারা যায়। ওখানে থেকে গেলে আমরাও হয়তো মারা যেতাম। ৭০-এর সেই ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে হলে এখনও চোখে পানি চলে আসে।’

সে সময় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভোলা আসনের জাতীয় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।

টুলু জানান, ভোলায় ঘূর্ণিঝড় ছিল ঘণ্টায় প্রায় ২২০ কিলোমিটার বেগের আর উচ্চতা ছিল প্রায় ১০ ফুট। মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি প্রচুর পশুপাখিরও প্রাণ যায় এতে।

মনপুরার বাসিন্দা রাহেলা বেগম এই ঘূর্ণিঝড়ে হারিয়েছেন তার স্বামী ও তিন সন্তানকে। তিনি জানান, যখন পানি বাড়তে শুরু করে তখন স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে গাছে আশ্রয় নেন। রাহেলা তখন অন্তঃসত্ত্বা। একসময় বাতাসের তোড়ে গাছ থেকে পড়ে যান।

খেজুরগাছের পাতা ধরে বাঁচার চেষ্টা করেন। স্রোতের টানে ভেসে যান বঙ্গোপসাগরে। টানা ছয় দিন সাগরে ভাসার পর ভারতীয় জাহাজ তাকে উদ্ধার করে। পরে আর স্বামী-সন্তানদের খোঁজ পাননি। তাদের স্মৃতি আঁকড়ে বেঁচে আছেন তিনি।

কলেজ অধ্যক্ষ স ম ফারুক বলেন, ‘সে সময় উপকূলে পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার, টেকসই বাঁধ ছিল না। তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি।’

এই ঘূর্ণিঝড়ের পর এত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য ভোলায় পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টার ও বেড়িবাঁধ গড়ে ওঠেনি। এগুলো নির্মাণের পাশাপাশি ১২ নভেম্বরকে উপকূল দিবস ঘোষণার দাবি উপকূলবাসীর।

এই দিনটির স্মরণে ভোলা জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইয়ুথ পাওয়ার ইন বাংলাদেশ, বদ্বীপ ফোরাম ও জেলা নাগরিক ফোরাম নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর